এলডিসি থেকে উত্তরণের চূড়ান্ত সুপারিশ জাতির জন্য মর্যাদাকর : প্রধানমন্ত্রী

স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণে জাতিসংঘের কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসির (সিডিপি) চূড়ান্ত সুপারিশকে জাতির জন্য মর্যাদাকর বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

শনিবার বিকেলে সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর ৬ বছর নির্বাসিত জীবন শেষে ১৯৮১ সালে দেশে আসি। এরপর আমি ব্যাপকভাবে দেশের প্রত্যন্ত এলাকা সফর করি। আমি সে সময়ই প্রতিজ্ঞা করি, যদি কোনদিন আল্লাহ আমাকে সুযোগ দেন দেশ পরিচালনার, তাহলে গ্রামের উন্নয়নকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেব। গ্রামের মানুষের উন্নয়নে কিছু করার। তখন ৭০-৮০ ভাগ মানুষ গ্রামে বাস করতো। আমার মনে হয়েছিল এদের যদি দারিদ্র্যমুক্ত করতে পারি, তাহলেই বাংলাদেশ দারিদ্র্যমুক্ত হবে।

তিনি বলেন, ১৯৯৬ সালে জনগণের রায় নিয়ে আমি প্রথমবার সরকার গঠন করে আমার চিন্তা-চেতনাকে বাস্তবে রূপ দেওয়ার চেষ্টা করেছি। নতুন নতুন পরিকল্পনা, কর্মসূচি। সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি প্রবর্তনের মাধ্যমে গরিব, প্রান্তিক মানুষদের সরকারি ভাতার আওতায় নিয়ে এসেছি। কৃষি উৎপাদনের ওপর বিশেষ জোর দিয়ে দেশকে খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ করেছিলাম। মাঝখানে ৫ বছর বিএনপি-জামাত জোট ক্ষমতায় ছিল। তারা কী করেছিল আপনারা জানেন। ২০০৯ সালে দায়িত্ব নিয়ে আমরা অব্যাহতভাবে মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। আজকের যে উন্নতি, স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ, তা আমাদের বিগত ১২ বছরের নিরলস পরিকল্পনা, পরিশ্রম এবং প্রচেষ্টার ফসল। দেশের মানুষই এসব করেছেন। আমরা সরকারে থেকে শুধু নীতি-সহায়তা দিয়ে সুযোগ তৈরি করে দিয়েছি।

বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা বলেন, মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে দেশের সকল গৃহহীনদের ঘর প্রদান কর্মসূচির আওতায় ৮ লক্ষ ৯২ হাজার গৃহহীনকে ঘর প্রদান করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে ৭০ হাজার ঘর হস্তান্তর করা হয়েছে। আরও ৫০ হাজার গৃহ নির্মাণের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। ১৯৯৬ সাল থেকে এ পর্যন্ত মো ৯ লাখ ৯৮ হাজার ৩৪৬ পরিবারকে বাসস্থানের ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনি খাতে চলতি বাজেটে ৯৫ হাজার ৫৭৪ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে যা বাজেটের ১৬ দশমিক আট-তিন শতাংশ এবং জিডিপির ৩ দশমিক শূন্য-এক শতাংশ। উপকারভোগীর সংখ্যা প্রায় ৩ কোটি ২৫ লাখ। প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত ২ কোটি ৫৩ লাখ শিক্ষার্থীকে বৃত্তি, উপবৃত্তি প্রদান করা হয়।

১৯৭৫ সালে জাতিসংঘের স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকায় প্রথমবারের মতো অন্তর্ভুক্ত হয় বাংলাদেশ। জাতিসংঘের সামাজিক-অর্থনৈতিক বিভাগের তথ্য বলছে, স্বাধীনতার ৪৪ বছর পর ২০১৫ সালে প্রথমবারের মতো নিম্ন মধ্য আয়ের দেশের তালিকায় স্থান পায় বাংলাদেশ।