বিএনপির রাজনীতি খালেদার স্বাস্থ্যে সীমাবদ্ধ: তথ্যমন্ত্রী

দেশের জনসাধারণের স্বাস্থ্য নয় বরং বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য নিয়ে ভাবে বিএনপি বলে মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, তারা দেশের জনসাধারণের কথা চিন্তা করেন না। নিজেদের নিয়ে ভাবতেই বেশি পছন্দ করেন এবং ইদানিং তাদের রাজনীতি শুধু বেগম জিয়াকে নিয়ে সীমাবদ্ধ রয়েছে।

বুধবার দুপুরে রাজধানীর সার্কিট হাউজ রোডে বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউট (পিআইবি) মিলনায়তনে সাংবাদিকদের মাঝে সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের করোনাকালীন সহায়তা চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি একথা বলেন। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টে দেয়া ১০ কোটি টাকার চেকটি এ সময় ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাফর ওয়াজেদের হাতে তুলে দেন মন্ত্রী।

মন্ত্রী বলেন, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব নিজে সংবাদ সম্মেলন করে বলেছেন, বেগম খালেদা জিয়া আগের চেয়ে অনেক ভালো আছেন, স্বাভাবিকভাবে শ্বাস-প্রশ্বাস নিচ্ছেন, তার কোনো অক্সিজেন সহায়তা লাগছে না, অর্থাৎ বেগম খালেদা জিয়া দ্রুত আরোগ্য লাভ করছেন। কিন্তু যেভাবে বিদেশ নিয়ে যাওয়ার জন্য তারা তৎপর হয়ে উঠেছেন এবং সরকার আইনগত ব্যাখ্যা দিয়ে যখন বলল যে তাকে বিদেশ পাঠানো সুযোগ নেই, তখন তারা যেভাবে সমালোচনা করছেন, হুশিয়ারিও দিয়েছেন, তা শুনে অনেকে মুচকি হেসেছে।

তিনি বলেন, মির্জা ফখরুল সাহেবকে বলব, আপনাদের রাজনীতি দয়া করে শুধুমাত্র বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যে সীমাবদ্ধ রাখবেন না, রাজনীতিটা জনগণের জন্য করুন।

ড. হাছান বলেন, ক্রমাগতভাবে গত ১২ বছর ধরে আপনাদের রাজনীতিটা শুধুমাত্র বেগম জিয়ার মামলা, শাস্তি, তার হাঁটু এবং কোমরের ব্যাথার মধ্যেই সীমাবদ্ধ রেখেছেন, এই জন্য আপনারা ধীরে ধীরে ছোট হয়ে আসছেন।

হাছান মাহমুদ বলেন, আওয়ামী লীগের রাজনীতি হচ্ছে জনগণের পাশে থাকা। সারাদেশে আমাদের পক্ষ থেকে খাদ্য এবং ঈদ উপহার বিতরণ করা হচ্ছে। আর বিএনপিসহ তার মিত্রদের রাজনীতি হচ্ছে সরকারের কাজের সমালোচনা করা, ভুল না হলেও সমালোচনা করা। এই অহেতুক সমালোচনা করা উচিত নয়।

‘সাংবাদিকদের বেতনভাতা, চাকরি একটি শৃঙ্খলায় আনা দরকার, যাতে করে কেউ যেকোনো সময় চাকরিচ্যুত না হয়’- এমন মন্তব্য করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, কেউ কেউ পত্রিকার ডিক্লারেশন নিয়ে সাংবাদিকদের বেতনভাতা ঠিকভাবে দেন না, এটি হওয়া কোনোভাবেই উচিত নয়। আবার অনেকেই পত্রিকা বের করেন পাঁচশ কপি, ঘোষণা করেন পাঁচ হাজার বা পঞ্চাশ হাজার। এখানে শৃঙ্খলা আনা দরকার। আমি শুরু থেকেই চেষ্টা করছি, শৃঙ্খলা আনতে গিয়ে বহু বাধার সম্মুখীন হয়েছি। ইতিমধ্যেই বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে প্রকৃতপক্ষে কার প্রচার সংখ্যা কত সেটা আমরা নির্ধারণ করেছি। এই প্রচার সংখ্যাকে বাস্তবসম্মত করার জন্য আমি আপনাদের সহায়তা চাই।

‘প্রথম শ্রেণীর কর্মকর্তার চেয়েও বেশি মেধাবী অনেক সাংবাদিক, যারা ভালো চাকরি করেন, সমাজের জন্য অনেক অবদান রাখেন, তাদেরও চাকরির নিশ্চয়তা থাকবে না এটা হতে পারে না’- এমন মন্তব্য করে মন্ত্রী বলেন, পত্রিকায় সাংবাদিকদের জন্য ইন্স্যুরেন্স থাকা দরকার, কোনো কারণে কখনো পত্রিকা থেকে বেতন না পেলেও যেন ইন্স্যুরেন্স থেকে পায়। যে সমস্ত হাউজ থেকে সাংবাদিকদের ঠিকভাবে বেতনভাতা দেয়া হয় না, কিম্বা চাকরিচ্যুত করা হয়, সেসব হাউজ সরকারের যে সমস্ত সুযোগ সুবিধা পায়, সেগুলো নিয়ে আমাদের ভাবতে হবে, বলেন তিনি।

সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালনা জাফর ওয়াজেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন তথ্য ও সম্প্রচার সচিব খাজা মিয়া (অনলাইনে) এবং বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মোল্লা জালাল, ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব আব্দুল মজিদ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদ ও সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ আলম খান তপু। অনুষ্ঠানে ২২১ জনের মাঝে চেক বিতরণ করেন অতিথিরা।