ভারতের প্রধানমন্ত্রীর বাংলাদেশ সফরে দেশে সহিংস বিক্ষোভে অর্থ জোগানদাতাদের উৎস খুঁতে নতুন করে বাংলাদেশ হেফাজতে ইসলামের আরও ৪৬ জন নেতার ব্যাংক হিসাবের তথ্য চেয়েছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ।
গোয়েন্দা ইউনিট (বিএফআইইউ) এর আগে ২৪ নেতা ও ৩০টি মাদ্রাসার ব্যাংক হিসাবের তথ্য চেয়েছিলো।
সম্প্রতি ব্যাংকগুলোকে চিঠি দিয়ে হেফাজতের নেতাকর্মী ও এর সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের ব্যাংক হিসাবের তথ্য চেয়েছে মানি লন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধে গঠিত আর্থিক এ গোয়েন্দা ইউনিট। নতুন করে যাদের ব্যাংক হিসাবের তথ্য চাওয়া হয়েছে তাদের মধ্যে রয়েছেন- হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব জুনায়েদ আল হাবিব, প্রচার সম্পাদক গাজী ইয়াকুব উসমানী (কসবা), সহকারী আন্তর্জাতিক সম্পাদক শোয়াইব আহমেদ, সহকারী প্রচার সম্পাদক কামরুল ইসলাম কাসেমী, সক্রিয় সমর্থক আহমদ আলী কাসেমী, সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল হক ইসলামাবাদী, যুগ্ম মহাসচিব নাসির উদ্দিন মনির।
ঢাকা মহানগরীর দায়িত্বশীলদের মধ্যে রয়েছেন সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আতাউল্লাহ আমিন, অর্থ সম্পাদক মুফতি মনির হোসাইন কাসেমী, যুগ্ম মহাসচিব খালেদ সাইফুল্লাহ আইয়ুবী, সদস্য নূর হোসাইন নূরানী, সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতি সাখাওয়াত হোসাইন রাজি, সহকারী অর্থ সম্পাদক আহসান উল্লাহ, শিক্ষা ও সংস্কৃতি সম্পাদক হারুন ইজাহার, যুগ্ম সম্পাদক জালাল উদ্দিন।
এছাড়া তালিকায় আরও রয়েছেন- এরশাদ উল্লাহ কাসেমী, হাফেজ জুনায়েদ কাসেমী, মুহাম্মদ মহসিন মিয়া, মুফতি আবদুর রহিম কাসেমী, জাকারিয়া নোমান কাসেমী, মাহমুদুল হাসান গুনবী, আলী হাসান উসামা, নাসির উদ্দিন মনির, আহসান উল্লাহ মাস্টার, আসাদুল্লাহ আসাদ, মুসা বিন ইসহাক, ফজলুর রহিম কাসেমী, এহসানুল হক, খলিলুর রহমান মাদানী, আবু আম্মার আবদুল্লাহ, আজহারুল ইসলাম, শাহীনুর পাশা চৌধুরী, ওবায়দুল্লাহ কাসেমী, মুফতি আজহারুল ইসলাম, ড. আহমেদ আবদুল কাদের, মুফতি আমিনী (আশরাফ মাহাদী), মোহাম্মদুল্লাহ জামী, শাহ আকরাম আলী, মুফতি কামরুজ্জামান, মুফতি কেফায়েত উল্লাহ, ইনামুল হাসান ফারুকী, মুহসিনুল করিম, জয়নাল আবেদীন বাকাইলী, ফজলুল করীম কাসেমী। চিঠিতে হেফাজতে ইসলাম নেতাদের নামে খোলা হিসাবের যাবতীয় তথ্য সংশ্লিষ্ট কাগজপত্রাদিসহ হিসাব খোলার ফরম, কেওয়াইসি, টিপি, শুরু থেকে লেনদেন বিবরণী ইত্যাদি পাঠাতে বলা হয়েছে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ২৬ মার্চ দুদিনের সফরে ঢাকায় আসেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তার ওই সফরের প্রতিবাদে দেশব্যাপী বিক্ষোভ করে অরাজনৈতিক সংগঠন হেফাজতে ইসলাম। এ নিয়ে সরকারদলীয় নেতাকর্মী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষ হয়।
বিশেষ করে চট্টগ্রামের হাটহাজারী এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ব্যাপক সহিংসতা হয়, অগ্নিসংযোগ করা হয় বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায়। কয়েক দিনের সহিংস আন্দোলনে ১৩ জন মারা যাওয়ার পাশাপাশি অসংখ্য মানুষ আহত হন। এসব সহিংস কর্মকাণ্ডের জন্য হেফাজতকেই দায়ী করে সরকার।
পরে সংগঠনটির অনেক নেতাকে বিভিন্ন অভিযোগে গ্রেফতারও করা হয়। তাদের সহিংস আন্দোলনে কোনো সন্ত্রাসী অর্থায়ন হয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখতে ৫ এপ্রিল হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির জুনায়েদ বাবুনগরী, সাবেক মহাসচিব প্রয়াত নূর হুসাইন কাসেমী এবং বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ও হেফাজত নেতা মুহাম্মদ মামুনুল হকসহ ২৪ নেতার ব্যাংক হিসাব তলব করেছিল বিএফআইইউ।