দেশে করোনা পরিস্থিতি ভয়বহ রুপ নিচ্ছে। ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী ও মৃত্যুর সংখ্যা দিনকে দিন বেড়েই চলেছে। গেল ২৪ ঘণ্টায় রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে। একই ইউনিটে এর আগের দিন ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছিল।
মঙ্গলবার (৬ জুলাই) সকাল ৮টা থেকে বুধবার (৭ জুলাই) সকাল ৮টার মধ্যে তাদের মৃত্যু হয়েছে।
রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী জানান, মৃতদের মধ্যে করোনা আক্রান্ত হয়ে দুইজন ও উপসর্গে ১৭ জন মারা গেছেন। এছাড়া করোনা নেগেটিভ হওয়ার পরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতদের মধ্যে ১৩ জন পুরুষ এবং সাতজন নারী।
এদের মধ্যে ১৪ জনের বয়স ৬১ বছরের ওপরে। এছাড়া ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে দুইজন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে দুইজন ও ৪১ থেকে ৫০ বছরের দুইজন রয়েছেন।
গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ২০ জনের মধ্যে সাত জনের বাড়ি রাজশাহী জেলায়। এ ছাড়া নওগাঁর তিনজন, নাটোরের দুইজন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের দুইজন, পাবনার চারজন, কুষ্টিয়ার একজন ও মেহেরপুরের একজন রয়েছেন।
করোনা আক্রান্ত ও উপসর্গ নিয়ে রোগীদের ভর্তি ও সংক্রমণের বিষয়ে রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় রামেকে নতুন ভর্তি হয়েছেন ৬৬ জন। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৬৮ জন। রামেকে করোনা আক্রান্ত হয়ে ২০৮ এবং সন্দেহভাজন ও উপসর্গ নিয়ে ১৮০ জন ভর্তি রয়েছেন। বর্তমানে রামেক হাসপাতালে ৪৫৪টি করোনা ডেডিকেটেড শয্যার বিপরীতে রোগী ভর্তি ছিলেন ৪৭০ জন।
এদিকে, করোনা শনাক্তের বিষয়ে হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় রামেক হাসপাতালের পিসিআর মেশিনে ১৮৮টি নমুনা পরীক্ষায় ৪২ জনের করোনা পজিটিভ রিপোর্ট এসেছে। অন্যদিকে, মেডিক্যাল কলেজের পিসিআর মেশিনে ৩৭৪ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৭৪ জনের করোনা পজিটিভ রিপোর্ট আসে। দুই ল্যাবের টেস্টে মোট ৫৬২ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এতে ১১৬ জনের করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছেন। পরীক্ষা বিবেচনায় ২০ দশমিক ৩ শতাংশ থেকে বেড়ে আবার ২১ দশমিক ৯২ শতাংশ উঠেছে।
তবে চাঁপাইনবাবগঞ্জে করোনা শনাক্তের হার ১৮ দশমিক ৫২ শতাংশ থেকে কমে ১৫ দশমিক ৬৫ শতাংশে এসেছে। করোনার ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ রোধে রাজশাহীতে গত ১১ জুন থেকে বিশেষ লকডাউন চলমান আছে। রামেক হাসপাতালে এই সাতদিনে মোট ১২০ জনের মৃত্যু হলো। এছাড়া গত জুনে ৪০৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে করোনা পজিটিভ রোগী ছিলেন ১৮৯ জন। অন্যরা করোনা উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।