নিজস্ব প্রতিবেদক: আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন, যখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ করোনার ভ্যাকসিন আসে তখন বিএনপি বলেছিল ভ্যাকসিন তারা দিবে না। ভ্যাকসিনের মধ্যেও তারা অপপ্রচার চালিয়ে ছিল। একদিকে তাদের নেত্রী দণ্ডিত বেগম খালেদা জিয়াও ভ্যাকসিন দেয়, অন্যদিকে তাদের নেতারা ভ্যাকসিন নিয়ে সমালোচনা করে। আসলে বিএনপির একটি বাকবাকুম পার্টি তে পরিণত হয়েছে।
রবিবার সন্ধ্যায় ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনার ‘কারা অভ্যন্তরীণ দিবস’ উপলক্ষ্যে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, যখন করোনার মধ্যে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা শেখ হাসিনার নির্দেশে অসহায় ও দুস্থ মানুষের সেবায় নিরলস কাজ করে যাচ্ছে তখন বিএনপির নেতাকর্মীরা একফোঁটা চাল দিয়ে কাউকে সহযোগিতা করেননি। যখন করোনা ভাইরাস আক্রান্ত হয়ে ছেলে মারা পিতা দেখতে যেত না। পিতার মারা গেলে সন্তান যেতে চাইত না। তখনই তাদের পাশে ছাত্রলীগ নিরলস কাজ করে গেছেন। বঙ্গবন্ধুর আদর্শের ছাত্রলীগ শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছিল।
ওয়ান-ইলেভেনের স্মৃতিচারণ করে ছাত্রলীগের সাবেক এ নেতা বলেন, সেদিন বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনাকে গ্রেপ্তারের উদ্দেশ্য ছিল জনগণের কন্ঠরোধ করে দেওয়া। জনগণের অধিকার হরণের একটি কূটনৈতিক প্রক্রিয়া। এর শুরুটা হয় ২০০১ সালে। সে সময় তারা গণতন্ত্র রক্ষা কবজ শেখ হাসিনাকে হত্যার নীলনকশা করে। তারই অংশ হিসেবে বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে একুশে গ্রেনেড হামলায় ঘটনা ঘটায়। নানক আরো বলেন, মৃত্যুকে আলিঙ্গন করে শেখ হাসিনা যে স্বপ্ন নিয়ে লড়াই করছেন তা হলো জনগণের ভোট এবং ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াই। যখন তিনি জনগণ ধারপ্রান্তে, ঠিক সেই মুহূর্তে জাতীয়-আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রকারীরা এবং দলের অভ্যন্তরীণ সুবিধাবাদী উচ্চবিলাসী একটি গোষ্ঠী ঐক্যবদ্ধভাবে আমাদের বিজয়কে ব্যাহত করেতে ওয়ান ইলেভেন ঘটায়।
তিনি আরো বলেন, সে সময় নেত্রী গ্রেপ্তার হওয়ার আগে আমাকে শেষ বার্তা দিয়েছিলেন। তা হলো-‘নানক আমি চলে যাচ্ছি। বিশ্বাসঘাতকতার কি দেখেছিলে? দেখতে পাবে আমি গ্রেফতার হবার পরে।’ সেদিন দলের ভেতরে অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণ। সে সময়ে আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভা করা হয়েছিল রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে। সেই বর্ধিত সভায় তারা ভেবেছিল ওই ষড়যন্ত্রকারীরা তাদের মনের মত করে সিদ্ধান্ত দেবে। কিন্তু সিদ্ধান্ত নিতে পারে নাই কারণ জেলা থেকে আগত সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকরা বলেছিলেন নো শেখ হাসিনার নো ইলেকশন। নেত্রী শেখ হাসিনার একটি নির্ধারিত চেয়ার ফাঁকা রাখা হয়েছিল।
সভায় আওয়ামী লীগের যুগ্মসাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, ওয়ান-ইলেভেনের সময় মাননীয় নেত্রী শেখ হাসিনাকে যারা কারাবন্দি করেছিল এবং এর পিছনে যারা নীল নকশা এঁকেছেন, তাদেরকে শাস্তির আওতায় আনা হোক। দেশ-বিদেশে তারা যেখানেই থাকুক না কেন দেশের শান্তি এবং গণতন্ত্রকে রক্ষার্থে তাদের কে বিচারের আওতায় আনা প্রয়োজন। যারা শেখ হাসিনাকে, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও দেশের গণতন্ত্রকে মাইনাস করতে চেয়েছিল তাদের বিরুদ্ধে একটা বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন গঠন করে সেই নীল নকশাকারীদের মুখোশ উন্মোচন করে দেওয়া হোক। ছাত্রলীগের উদ্দেশে তিনি বলেন, আজকের ছাত্রলীগের নেতৃত্ব কারীরা আগামী দিনের বাংলাদেশের নেতৃত্ব দিবেন। ছাত্রলীগই বিএনপি-জামাতসহ সকল অপশক্তি কে প্রতিহত করে শান্তির সমৃদ্ধ দেশ গঠনে কাজ করবে।
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি সঞ্জিত চন্দ্র দাস, সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন। আরো বক্তব্য রাখেন সাবেক ছাত্রনেতা মাহমুদ হাসান রিপন, মাহফুজুল হায়দার রোটন, শেখ সোহেল রানা টিপু, সাজ্জাদ সাকিব বাদশা, সংগঠনের বর্তমান কেন্দ্রীয় সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য।