আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ এমপি বলেছেন, বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল একটা ভালো কাজ করেছে তারা আজ দেখাতে পারে না। বিএনপি ঈর্ষান্বিত হয়ে মিথ্যাচারে ব্যস্ত। বিএনপির প্রতি আহ্বান জানাই, আপনারা বর্তমান সরকারকে সহায়তা না করেন, অন্তত নির্লজ্জ মিথ্যাচার করে জনগণকে বিভ্রান্ত করবেন না।
আজ ২ আগস্ট সোমবার সকালে মিরপুর গার্লস আইডিয়াল কলেজ প্রাঙ্গনে শোকাবহ আগস্টে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বাস্তবায়নে পরিস্থিতির শিকার মানুষের কাছে শেখ হাসিনার উপহার সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে বলেন, আগস্ট আমাদের জাতীয় শোকের মাস। শোকাবহ মাস উপলক্ষে আজকের এই অনুষ্ঠানে দাঁড়িয়ে ১৯৭৫ সালের বঙ্গবন্ধু পরিবারের যারা শহীদ হয়েছিলো তাদের ও জাতীয় ৪ নেতার প্রতি শ্রদ্ধা জানানা।
মাহবুব-উল-আলম হানিফ বলেন, এই করোনার দুর্যোগের সময়ও বিএনপির শীর্ষ নেতারা সরকারের বিরুদ্ধে বিষোদগার করে যাচ্ছে। বিএনপি নেতা মির্জা ফখরুল সাহেব সুযোগ পেলেই মিথ্যাচার করেন। এই করোনার সময়ও তারা জাতিকে বিভ্রান্ত করছে, মিথ্যাচার করছে।
আওয়ামী লীগের এই যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক বলেন, মির্জা ফখরুলরা সরকারের কোন উন্নয়ন দেখেন না। ঢাকায় মেট্রোরেল চালু হচ্ছে, পায়রা বন্দর হচ্ছে, বিদ্যুৎ উৎপাদন চার হাজার মেগাওয়াট থেকে চব্বিশ হাজার মেগাওয়াটে উন্নীত হয়েছে, কর্ণফুলী টানেল হচ্ছে, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র হচ্ছে, অজস্র উন্নয়ন হচ্ছে। এগুলোর কোনটাই বিএনপির চোখে পড়ে না।
মাহবুব-উল-আলম হানিফ বলেন, করোনা একটি ভয়াবহ রোগ। বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা বারবার দেশবাসীর কাছে অনুরোধ করেছেন চিকিৎসা বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ মেনে চলার জন্য, যথাযথভাবে মাস্ক পড়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য, ভ্যাকসিন দেওয়ার জন্য। আমরা এখনও বলছি লকডাউন করোনার সংক্রমণ রোধের একমাত্র উপায় নয়। করোনা সংক্রমণ রোধ করতে হলে ভ্যাকসিন নিতে হবে, তবেই শরীরে এন্টিবডি তৈরি হবে। সবাইকে মাস্ক পরতে হবে এবং হাত পরিষ্কার রাখতে হবে, যাতে হাতের মাধ্যমে নাকে, চোখে-মুখে ভাইরাস প্রবেশ করতে না পারে। আমরা সবাই সচেতন হিসেবে ঘরের বাইরে যখন যাব তখন অবশ্যই মাস্ক পরাবো। এতে আমরা নিরাপদ থাকতে পারবো, অন্যকেও নিরাপদ রাখতে পারবো। মাস্ক পরিধানের কোন বিকল্প নেই। আপনাদের কাছে এবং দেশবাসীর কাছে অনুরোধ জানাচ্ছি চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যে নির্দেশনাগুলো দিয়েছেন আমরা যাতে সেগুলো মেনে চলি।
চিকিৎসকদের পরামর্শ উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ডিসেম্বরের মধ্যে আমরা আশি ভাগ জনগণকে যাতে ভ্যাকসিনের আওতায় আনতে পারি সে লক্ষ্যে সরকার কাজ করছে। চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী ভাইরাস রোধ করতে হলে ভ্যাকসিন দিয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। প্রয়োজনে ঘরের বাহিরে গেলে মাস্ক পরিধানের ফলে আপনারা নিরাপদ থাকবেন। ডিসেম্বরের মধ্যে আমরা আশি ভাগ জনগণকে যাতে ভ্যাকসিনের আওতায় আনতে পারি সে লক্ষ্যে সরকার কাজ করছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে যাতে এক কোটি মানুষকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্যে কাজ চলছে। আমাদের টিকা মজুদ আছে এবং এক সপ্তাহে প্রতিটি ইউনিয়নে পাঁচ হাজার জনকে টিকার আওতায় নিয়ে আসা হবে। এক সপ্তাহের মধ্যে এক কোটিরও বেশি ব্যক্তি টিকার আওতায় আসবে। মহামারি থেকে বাঁচার জন্য মাস্কের বিকল্প নেই।
তিনি বলেন, আজকে আমরা মানবিক উপহার দেয়ার জন্য এসেছি। বাংলাদেশ আওমীলীগ একমাত্র দল যারা প্রতিষ্ঠার পর থেকেই বাংলাদেশের যেকোনো দুর্যোগে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। আমাদের এই ত্রাণ কার্যক্রম চলবে। যারা বিত্তবান আছেন তাদের প্রতি আমি আগেও আহ্বান জানিয়েছি, আজও আহ্বান জানাচ্ছি, অসহায় মানুষের প্রতি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিন। পাশাপাশি যে যার জায়গা থেকে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ান। মানুষের পাশে দাড়ানোর চেয়ে ভালো কোন কাজ হতে পারে না।
বিএনপির মিথ্যাচার ছাড়া আর কোন কাজ নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, করোনাকালে আমদের কর্মীরা যখন মানুষের পাশে সাহায্য নিয়ে এগিয়ে আসছে, সেই সময় দলটির নেতারা মানুষের পাশে না দাঁড়িয়ে ভাইরাস ভ্যাকসিন নিয়ে মিথ্যাচারে ব্যস্ত সময় পার করছে।
ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লা এমপির সভাপতিত্বে এবং ঢাকা মহানগর উত্তর যুবলীগের সহ-সভাপতি ও কাউন্সিলর কাজী জহিরুল ইসলাম মানিকের সঞ্চালনায় ত্রাণ বিতরণ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম এমপি, উপদেষ্টামন্ডলীর সদস্য এ কে এম রহমত উল্লাহ এমপি, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচি প্রমুখ।