বঙ্গবন্ধুকে জাতির পিতা করেছেন বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব: আব্দুর রহমান

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, ঢাকা: ‘বঙ্গবন্ধুর জীবনে কোন দিন ‘বঙ্গবন্ধু’ নামকরণ হওয়া সম্ভব হতো না, বঙ্গবন্ধু কোনদিনও জাতির পিতা হতে পারতেন না যদি বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবের মতো একজন সাহসী মহিয়সী নারী তার প্রিয় সহধর্মীনি না হতেন। বঙ্গবন্ধু মুক্তিযুদ্ধের মহান কারিগর। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের সারাজীবনের লালিত সংগ্রামের রক্ত ফসল আমাদের স্বাধীনতা, আর সেই বঙ্গবন্ধু যদি হন বাংলাদেশের প্রধান কারিগর, বেগম মুজিব ছিলেন স্থাপত্য শিল্পের একজন বড় কর্মী এবং বড় একজন শিল্পী।’

রোববার (০৮ আগস্ট) আজিমপুরে স্যার সলিমুল্লাহ মুসলিম এতিমখানায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত ‘বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব এর ৯১তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য আব্দুর রহমান একথা বলেন।

আব্দুর রহমান বলেন, বঙ্গমাতা বঙ্গবন্ধুর প্রেরণার সাথি ছিলেন। অনুপ্রেরণা এবং সকল সংগ্রমে সংকটে সম্ভাবনায় বঙ্গবন্ধুর প্রিয় সহধর্মীনি ফজিলাতুন্নেছা ছিলেন নির্ভিতে উৎসর্গিত এক মহাজীবন। তিনি তারা সারা জীবনে বঙ্গবন্ধুর সংগ্রাম, সংকট উত্তরণের লড়াইয়ে বঙ্গবন্ধুকে সাহায্য করেছেন। বঙ্গবন্ধু মুক্তিযুদ্ধের মহান কারিগর। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের সারাজীবনের লালিত সংগ্রামের রক্ত ফসল আমাদের এই স্বাধীনতা, আর সেই বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের প্রধান কারিগরের বেগম মুজিব ছিলেন স্থাপত্য শিল্পের একজন বড় কর্মী এবং বড় একজন শিল্পী।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর জীবনে কোন দিন বঙ্গবন্ধু নামকরণ হওয়া সম্ভব হতো না বঙ্গবন্ধু কোনদিনও জাতির পিতা হতে পারতেন না, যদি বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের মতো একহন সাহসী মহিয়সী নারী তার প্রিয় সহধর্মীনি না হতেন। বঙ্গবন্ধু নিজেই বলেছেন আমার জীবনের প্রধান অবলম্বন দুইটি, একটি হলো আমার নিজের আত্ম:বিশ্বাস, আর একটি হলো এই রেনুর মতো একজন প্রিয় সহধর্মীনি। যিনি একই সঙ্গে একজন গৃহিনী।

এই আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, বঙ্গবন্ধুর সারাজীবনের রাজনীতি যেমনি তার কারাগারে অন্ধকার সময় তিনি নিজে পাহাড়া দিয়েছেন, নেতাকর্মীদের দেখেছেন, সংসার দেখেছেন, সমস্ত কিছু সামাল দিয়ে তিনি বঙ্গবন্ধুকে বঙ্গবন্ধু করেছেন, বঙ্গবন্ধুকে জাতির পিতা করেছেন।

তিনি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধু আমাদের মানচিত্র দিয়েছেন, স্বাধীনতা দিয়েছেন, মুক্তিযুদ্ধের ফসল দিয়েছেন। আজ বঙ্গবন্ধু যদি দেশ না দিতেন তাহলে গোলাম চাকরের মতো আমাদের জীবন চলতো। আর বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য বঙ্গবন্ধু সারাজীবন লড়াই সংগ্রামের বাকে বাকে বেগম ফজিলাতুননেছা মুজিব ছিলেন অতন্ত প্রহরীর মতো পাহারাদার। বঙ্গবন্ধু ১৯৪৯ সালে ভাষা আন্দোলনের সময় গ্রেফতার হন তখন দীর্ঘ দুই বছর কারাগারে ছিলেন, এক পর্যায়ে তিনি কারাগারে থেকেই অনশনের সিদ্ধান্ত গ্রহন করেন। বঙ্গবন্ধুর শরীর মারাত্নকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে স্থানান্তর করা হয় ফরিদপুর কারাগারে। বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিব আমাদের প্রিয় নেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে যখন সাক্ষাত করতে এসেছিলেন সেই কারাগারের গেটে এসে শুনলেন বঙ্গবন্ধুকে ফরিদপুর কারাগারে স্থানান্তর করা হয়েছে। অত:পর তারা বঙ্গবন্ধুর সাথে দেখা না করে টুঙ্গীপাড়ায় চলে যান এবং ২৭ ফেব্রুয়ারি বঙ্গবন্ধু ফরিদপুর কারাগার থেকে মুক্ত হন। এরপর দুই দিন পর রওনা দিয়ে টঙ্গীপাড়া যাওয়ার পর প্রিয় নেত্রী তখন ৪ বছরের ছোট্ট মেয়ে তখন বাবাকে জড়িয়ে ধরে জিজ্ঞাস করতে চান নাই কেমন আছো, কারাগারে কেমন ছিলে, সেদিন সকল কিছু বিসর্জন দিয়ে বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেছিলেন রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই, রাজবন্ধীদের মুক্তি চাই। তিনি সেদিন এই ছোট্ট বয়সে তার পিতার গলা জড়িয়ে ধরে এই স্লোগান দিয়েছিলেন।

আর ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বলেছিলেন তুমি যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তোমার যদি কিছু হতো তাহলে তোমার ছেলে মেয়ের কি হতো? এই সংসারের কি হতো তুমি কি একবার ভেবে দেখেছো। তখন বঙ্গবন্ধু দীর্ঘ শ্বা:স ছেড়ে তিনি বলেছিলেন সত্যি তো আমি ছাড়া রেনুর তো এই দুনিয়ায় দেখবার কেউ নাই, আমার যদি কিছু হয়ে যায় তাহলে কোথায় গিয়ে দাঁড়াতো? বঙ্গবন্ধু সারাজীবনে সংগ্রামকে তিনি তার জীবন দিয়ে সমর্থন শুধু নয় মায়ের স্নেহে বোনের স্নেহে এবং স্ত্রীর কর্তব্য পালনের মধ্যে দিয়ে তিনি তার সেই কাজটি করেছেন। তিনি একই ভাবে ছিলেন সহধর্মীনি, মায়ের স্নেহে, বোনের স্নেহে তিনি সারাজীবন বঙ্গবন্ধুর পাশে ছিলেন। ’৭৫ সালের ১৫ আগস্টের সেই বন্ধন ছিন্ন করেন নাই। বঙ্গবন্ধুর রক্তের মোহনায় একই মোহনায় মিলিত হয়েছেন।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মান্নাফি’র সভাপতিত্বে আলোচনায় সভায় বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কার্যকরী সদস্য মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির।