ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি হয়েছেন কাজী রওনাকুল ইসলাম শ্রাবণ। তিনি যশোরের কেশবপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান কাজী রফিকুল ইসলামের ছেলে।
রোববার বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়। ওই কমিটি ঘোষণার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানাভাবে আলোচিত হচ্ছে শ্রাবণের সভাপতি হওয়ার বিষয়টি।
এর আগে ২০১৯ সালের ১৪ সেপ্টেম্বরে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সম্মেলনে সভাপতি প্রার্থী ছিলেন কাজী রওনাকুল ইসলাম শ্রাবণ। সেই সময় আওয়ামী লীগ নেতার ছেলে ছাত্রদলের সভাপতি প্রার্থী হওয়া নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হয়। ওই সম্মেলনে ভোটে হেরে তিনি সিনিয়র সহ-সভাপতি মনোনীত হন।
স্থানীয় সূত্র জানায়, রফিকুল ইসলামের বড় ছেলে কাজী মুস্তাফিজুর রহমান উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক। মেজো ছেলে কাজী মুজাহিদুল ইসলাম পান্না উপজেলা যুবলীগের সাবেক আহবায়ক। সেজো ছেলে কাজী আজাহারুল ইসলাম মানিক উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক। আর রফিকুল ইসলামের ছোট ছেলে রওনাকুল ইসলাম শ্রাবণ। কেশবপুরে কাজী পরিবারের প্রায় সবাই আওয়ামী লীগের সঙ্গে যুক্ত থাকলেও কাজী রওনাকুল ইসলাম শ্রাবণ ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি হওয়ায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনা চলছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে শ্রাবণের বড় ভাই কাজী মুস্তাফিজুল ইসলাম বলেন, আমার ছোট ভাই শ্রাবণের সঙ্গে আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই। গত ১৬ বছর ধরে সে বাড়িতে আসে না। আমাদের পরিবারের বাকি সবাই আওয়ামী লীগ করলেও সে তার নিজস্ব চিন্তা-চেতনায় রাজনীতি করে।
এ প্রসঙ্গে কেশবপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাস্টার রুহুল আমিন বলেন, রাজনীতি করার অধিকার সবার আছে। পরিবারের সবাই আওয়ামী লীগের রাজনীতি করলেও শ্রাবণ ছাত্রকাল থেকেই বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। এতে দোষের কিছু নেই।
তিনি আরও বলেন, শ্রাবণ ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হয়েছে, এটাকে ইতিবাচক হিসেবেই দেখছি। বিষয়টি নিয়ে আমাদের দলে কোনো প্রতিক্রিয়া আছে বলে মনে হয় না।
এদিকে শ্রাবণ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হওয়ায় সন্ধ্যায় কেশবপুর শহরে আনন্দ মিছিল বের করে উপজেলা ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। তারা শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করেন এবং মিছিল শেষে মিষ্টিমুখের আয়োজন করা হয়।
উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আজিজুর রহমান বলেন, ‘আমরা অত্যন্ত খুশি হয়েছি। মহাকবি মাইকেল মধুসূদনের জন্মস্থান কেশবপুরের আরেক কৃতী সন্তান শ্রাবণ ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি হয়েছেন। এটা অবশ্যই আমাদের জন্যে গর্বের।’
তিনি আরও বলেন, ‘শ্রাবণ ভাইয়ের পরিবারের সবাই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তিনিই একমাত্র আমাদের দলের সঙ্গে রয়েছেন। সে কারণে বাবা ও ভাইয়েরা তার সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদ করেন। তিনিও বাড়ি যেতেন না। ২০১৮ সালে ভোটের সময় ধানের শীষের জন্যে কাজ করতে একবার এসেছিলেন।’