বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার উৎখাত করতে চায় : প্রধানমন্ত্রী

বিএনপি-জামায়াত জোট ও সরকার বিরোধীদের ইঙ্গিত করে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রশ্ন রেখেছেন, ‘তারা যে সরকার উৎখাত করতে চায়, তাদের উদ্দেশ্যটা কী।’

বুধবার রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে কৃষক লীগের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ প্রশ্ন রাখেন। সভায় প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হন।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘সারা বিশ্বের কাছে বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল। কিছু মানুষ বিদেশে নানাভাবে অপপ্রচার চালিয়ে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করতে ব্যস্ত, সরকার উৎখাতে ব্যস্ত। খুব ভালো কথা, তাদের কর্মসূচি জনগণের কাছে তুলে ধরুক, যে তারা দেশের মানুষের জন্য কী করবে।’

তিনি বলেন, ‘একটি কথা আমি একটু বলতে চাই। আমাদের দেশের কিছু নেতা আছে, দুঃসময়ে মানুষের পাশে কতটুকু দাঁড়িয়েছে জানি না, করোনার সময়ে মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের সাহায্য করেছে কি না, সেটারও কোনো লক্ষণ আমরা দেখি না, তবে তারা আন্দোলনের জন্য খুব ব্যস্ত। কেন? কারণ এ সরকারকে হটাতে হবে। কোন সরকার? আওয়ামী লীগ সরকার। বিএনপি-জামায়াত জোটের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন মান্না ও ড. কামাল হোসেনসহ তাদের একটি গ্রুপ। সেই সঙ্গে আবার তাদের সঙ্গে যুক্ত কমিউনিস্ট পার্টি, আমাদের বাম দল, বাসদ-টাসদ আরও কারা কারা। তারা সবাই এক হয়ে আন্দোলন করে আওয়ামী লীগ সরকার হটাবে।’

সরকারপ্রধান বলেন, ‘আমার প্রশ্ন, অপরাধটা কি আওয়ামী লীগের। আমরা সরকারে এসেছি ২০০৮ সালের নির্বাচনে। যে নির্বাচনী ইশতেহার দিয়েছিলাম তাতে রূপকল্প-২১ ঘোষণা দিয়েছিলাম। আমাদের লক্ষ্য আমরা স্থির করেছিলাম ২০২১ সাল পর্যন্ত। আমি কৃতজ্ঞতা জানাই বাংলাদেশের জনগণের প্রতি। তারা বার বার আমাদের ভোট দিয়েছে, ভোটে নির্বাচিত হয়ে আমরা সরকারে এসেছি। আমরা আমাদের নির্বাচনী ইশতেহার হিসেবে আমাদের লক্ষ্য আমরা অর্জন করেছি।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলেছি। সারের দাম আমরা কমিয়েছি ৪ দফা। আমরা নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করতে সক্ষম হয়েছি। যেটা নিয়ে একটা বড় চ্যালেঞ্জ আমাদের ছিল। আমাদের এই একটা সিদ্ধান্তই সারা বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি পরিবর্তন করে দিয়েছে। পদ্মা সেতু নিয়ে যখন মিথ্যা অপবাদ দেওয়ার চেষ্টা করেছিল, আমরা ঘোষণা দিয়েছিলাম কারো টাকা লাগবে না, নিজের টাকায় পদ্মা সেতু বানাব। আল্লাহর রহমতে সেটা তৈরি করে ফেলেছি। আজকের বাংলাদেশ ডিজিটাল বাংলাদেশ। প্রতিটি ইউনিয়নে ব্রডব্যান্ড কানেকশন দিয়েছি আমরা। ডিজিটাল সেন্টার করেছি। আজকের বাংলাদেশে এ ডিজিটাল পদ্ধতি ব্যবহার করে অনেক মানুষ নিজের ঘরে বসে বিদেশে কাজ করার সুযোগ পাচ্ছে। আর্থিক সচ্ছলতা পাচ্ছে, তাদেরকে আমরা ট্রেনিং করাচ্ছি।’

পায়রায় বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে টাকার সাশ্রয় হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘অনেকেই প্রশ্ন করেন, এত বড় বড় প্রকল্পের প্রয়োজন কী। শতভাগ বিদ্যুৎ দিতে গেলে বিদ্যুৎ তো আমাদের তৈরি করতেই হবে। আমরা যে সেখানে প্রায় ৯শ কোটি টাকার মতো বাঁচাতে পারলাম, এ কথা তো কেউ বলেন না। এটা বলতে তাদের একটু কষ্টই হয়। একটা প্রজেক্টে টাকা আরও সাশ্রয় হয়, এটা বোধ হয় আমাদের সমালোচকদের পছন্দ নয়।’
কৃষক লীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘নতুন নতুন দাবি করা লাগবে না। এই দেশের কৃষকের জন্য কোনটা মঙ্গলের সেটা আওয়ামী লীগ সরকার ভালোভাবেই জানে।’

এবারও ধান কাটার সময় কৃষক লীগকে কৃষকের পাশে থাকার আহ্বান জানান শেখ হাসিনা।