আগস্টকে সামনে রেখেই ভোলায় ঘটনা ঘটিয়েছে বিএনপি : তথ্যমন্ত্রী

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘আগস্ট মাস এলে বিএনপি নানামুখী ষড়যন্ত্র শুরু করে, এবারও তারা সারা দেশব্যাপী নানামুখী ষড়যন্ত্র-নাশকতা করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। দেশকে উত্তপ্ত করার সেই পরিকল্পনারই অংশ হিসেবে ভোলায় তারা গন্ডগোল করেছে।’

সোমবার পয়লা আগস্ট বিকেলে বন্দরনগরী চট্টগ্রামের নতুন রেল স্টেশনে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ভ্রাম্যমাণ রেল জাদুঘর’ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মন্ত্রী এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘আগস্ট মাস এলেই নানামুখী ষড়যন্ত্রে সরব হয় বিএনপি এবং স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি। এই আগস্ট মাসেই তারেক জিয়ার নেতৃত্বে এবং বেগম জিয়ার জ্ঞাতসারে প্রকাশ্য দিবালোকে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা চালিয়ে বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার অপচেষ্টা চালানো হয়েছে। ১৭ আগস্ট সারাদেশে একযোগে পাঁচ’শ জায়গায় বোমা হামলা হয়েছে।’

বিএনপি মহাসচিবের মন্তব্য ‘পুলিশ দিয়ে সরকার আন্দোলন ঠেকানোর অপচেষ্টা চালাচ্ছে’ এ নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী হাছান বলেন, ‘তদন্তে বেরিয়ে আসবে আসলে তিনি কিভাবে মৃত্যুবরণ করেছেন। আগস্ট মাসকে সামনে রেখে বিএনপি সারাদেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে এটি আমরা জানি। তবে বিএনপিকে সেই সুযোগ দেয়া হবেনা। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ জনগণের দল, উনারা তো এখন একা মিটিং মিছিল করছে, আমরা তো এখনো শুরু করি নাই। মোকাবিলা করার মানসিকতা নিয়ে আমরা মাঠে নামলে বিএনপি কোথায় পালায় সেটি হচ্ছে প্রশ্ন।’

১৯৭৫ সালের আগস্ট মাস স্মরণ করে মন্ত্রী বলেন, ‘যেই দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক শক্তি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধাচারণ করেছিল, সেই দুই শক্তি একীভূত হয়ে ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করেছে। আর সেই হত্যাকান্ডের অন্যতম প্রধান কুশীলব ছিল বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান।’

ড. হাছান বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর জিয়াউর রহমানকেই সেনাবাহিনীর প্রধান নিয়োগ করেছিল খন্দকার মোস্তাক আহমেদ। এতে কি প্রমাণিত হয় ? এতে প্রমাণিত হয় জিয়াউর রহমানই বঙ্গবন্ধুর হত্যাকান্ডের অন্যতম প্রধান কুশীলব। ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুর হত্যাকান্ড শুধুমাত্র জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকান্ড নয়, সেদিন প্রকৃতপক্ষে বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে হত্যা করার লক্ষ্যেই বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করা হয়েছিল। কারণ এরপরই পাকিস্তানের সাথে কনফেডারেশনের, আমাদের জাতীয় সঙ্গীত এবং জাতীয় পতাকা পরিবর্তনের অপচেষ্টাও হয়েছিল। হত্যাকান্ডের সাথে যুক্ত আন্তর্জাতিক এবং দেশীয় শক্তি এসবে মদদ দিয়েছিল।’

বঙ্গবন্ধু ভ্রাম্যমাণ রেল জাদুঘরের জন্য রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের প্রশংসা করেন তথ্যমন্ত্রী।
বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের বিচারের প্রসিডিংটি রেলওয়ের ভ্রাম্যমাণ জাদুঘরে রাখার অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, সেখানে যারা জবানবন্দি দিয়েছেন, তারা জিয়াউর রহমান কোন অবস্থায় ছিল, খোন্দকার মোস্তাক কি অবস্থায় ছিল এগুলো বিস্তারিত বলেছেন। পাঁচ’শ বছর পরের প্রজন্মও যাতে ইতিহাস সঠিকভাবে জানতে পারে সেজন্য একটি কমিশন গঠন করে জিয়াউর রহমানসহ যারা বঙ্গবন্ধুর হত্যাকান্ডের কুশীলব ছিল তাদের মুখোশ উম্মোচন হওয়া প্রয়োজন।

বাংলাদেশ রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক মো. জাহাঙ্গীর হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. ফারুক-উজ-জামান। রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রধান যান্ত্রিক প্রকৌশলী বোরহান উদ্দিন স্বাগত বক্তব্য দেন।