জিয়া বেঁচে থাকলে বঙ্গবন্ধুর খুনিদের সাথে তাকেও বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হত: আফজাল হোসেন

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন বলেছেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে যদি কোন বেঈমান-বিশ্বাসঘাতক এর নাম থাকে সেটা হল জেনারেল জিয়া। সে সেনাবাহিনীর সর্বোচ্চ পদে থাকা অবস্থায় তার দেশের রাষ্ট্রপতিকে হত্যায় জড়িত ছিলো। এর থেকে বড় বেইমান আর হয়না। বঙ্গবন্ধুকে যারা হত্যা করেছে তারা টেলিভিশন সাক্ষাতকারে বলেছিল তাদের পরিকল্পনার কথা তারা জেনারেল জিয়াকে জানিয়েছিল। জিয়াউর রহমান তাদের গ্রিন সিগন্যাল দিয়েছিল। বলেছিল এগিয়ে যাও। একজন সেনা কর্মকর্তা যখন তার অধীনস্থ অফিসারদের বলে এগিয়ে যাও তখন সেখানে এক ধরনের নির্দেশ কাজ করে। সুতরাং বঙ্গবন্ধু হত্যায় জিয়া জড়িত। জিয়া যদি বেঁচে থাকতো তাহলে বঙ্গবন্ধুর খুনিদের সাথে তাকেও বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হত।

বৃহস্পতিবার (১৮ আগষ্ট) পটুয়াখালী জেলা আওয়ামী যুবলীগের উদ্যোগে ১৫ আগষ্ট জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে সকালে পটুয়াখালী শিল্পকলা একাডেমিতে আয়োজিত স্বরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, আজকে সারা দেশের মানুষ বঙ্গবন্ধুকে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে। অথচ এমন একটা দিন ছিল যখন আমরা বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার চাইতে পারতাম না। আমরা পোস্টার দেখেছি কাঁদো বাঙালি কাঁদো, বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার চাই। কিন্তু আমরা তখন বিচার পাইনি। পরবর্তীতে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার করেছি। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মাধ্যমে শুধু একটা মানুষকে হত্যা করা হয়নি, তাকে হত্যার মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতি রাষ্ট্র নির্মাণের দার্শনিক ভিত্তি ধ্বংস করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু তার জীবনের ১৩/১৪ বছর কারাগারে কাটিয়েছেন। জীবনমৃত্যুকে পেছনে ফেলে তিনি দেশবাসীর সাথে নিয়ে তিলেতিলে একটি জাতিকে স্বাধীনতার জন্য প্রস্তুত করেছেন। সেই বঙ্গবন্ধুকে কাপুরুষের মত খুনির দলেরা হত্যা করেছে। তাকে হত্যা করার মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতির স্বাধীন রাষ্ট্রের যে আকাঙ্ক্ষা সেটিকে তারা ধ্বংস করতে চেয়েছিল। তারা চেয়েছিল এদেশে যাতে মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তি না থাকে। তারা দেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ধ্বংস করতে চেয়েছে।

আওয়ামী লীগের এ নেতা বলেন, বঙ্গবন্ধুকে তাৎক্ষণিক কোনো সিদ্ধান্তে হত্যা করা হয়নি। এ হত্যাকাণ্ড ছিল একটি সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা এবং আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা এখনো সেই হত্যাকাণ্ডের শিকার হচ্ছে। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা কিছুদিন আগে আমাদের সাংগঠনিক সম্পাদকদের সাথে বৈঠক করেছিলেন। তখন তিনি অনেক কথা বলেছেন। তিনি বলেন ১৯৭০ সালের নির্বাচনে যখন আমরা জয়লাভ করি তখন আমাদের আওয়ামী লীগের এমপিদের হত্যা করা হয়েছিল এবং তার পরে পচাত্তরের আগে দেশে বিশৃঙ্খলা তৈরি করার জন্য অনেক কিছুই করা হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের আগের ও পরের প্রকৃত ইতিহাস তরুণ প্রজন্মের জানাতে হবে।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যার সাথে যারা জড়িত তারা এখনও বাংলাদেশের রাজনীতি করে। সেই রাজনৈতিক শক্তি আমাদের নেত্রীকে হত্যা করার জন্য ২১ আগষ্ট গ্রেনেড হামলা করেছিল। গত কালকে আমরা সিরিজ বোমা হামলা দিবস পালন করেছি।এ ঘটনা ছিল ২০০৫ সালের। এটা নতুন প্রজন্মের জানতে হবে। এই বিএনপি-জামাত সরকার জঙ্গিদের দিয়ে সারাদেশে বোমা হামলা করে ক্ষমতায় থাকতে চেয়েছিল। তারা ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় বহু বুদ্ধিজীবী, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি ও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের হত্যা করেছে।

পটুয়াখালী জেলা যুবলীগের সভাপতি এডভোকেট শহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মোহাম্মদ সোহেল এর সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পটুয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কাজী আলমগীর, সাধারণ সম্পাদক ভিপি আব্দুল মান্নান, জেলা পরিষদের প্রশাসক খলিলুর রহমান মোহন, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট গোলাম সারওয়ার, পৌর মেয়র মহিউদ্দিন আহমেদ প্রমুখ।