আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ১৫০ আসনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহারের ঘোষণায় নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কড়া সমালোচনা করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ। তিনি বলেছেন— এ নির্বাচন কমিশন যে শেখ হাসিনা সরকারের আজ্ঞাবহ তা আবারো প্রমাণ করেছে।
তিনি বলেন, ক্ষমতায় টিকে থাকতে সরকার কেন বিদেশিদের কাছে সহযোগিতা চাচ্ছে। সেটা মঙ্গলবার (২৩ আগস্ট) আবারও প্রমাণ করেছে নির্বাচন কমিশন। প্রথমেই আমরা বলেছি— এ সরকার যেখানে যাকে নিয়োগ করবে তাদের পরিচয় যাইহোক, তাদের অন্তর ছাত্রলীগ যুবলীগ। যুবলীগ, ছাত্রলীগের অন্তর থাকার কারণে গণভবন থেকে যে নির্দেশনা আসবে তারা এর বাইরে যাবে না। আমরা বলেছি, এ নির্বাচন কমিশন শেখ হাসিনার আজ্ঞাবহ। সুষ্ঠু নির্বাচন করার ক্ষমতা এ নির্বাচন কমিশনের নেই। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে তিনি যে সংলাপ করেছিলেন সেখানে অধিকাংশ দল ইভিএমের বিপক্ষে কথা বলেছিলাম। কিন্তু মঙ্গলবার তিনি বললেন ১৫০ আসনে ইভিএম ব্যবহার করা হবে। তাহলে কিসের জন্য এ সংলাপ?
বুধবার (২৪ আগস্ট) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক মানববন্ধনে এ কথা বলেন রিজভী। চা শ্রমিকদের দৈনিক ৩০০ টাকা মজুরি দাবি, আবাসন, খাদ্য, স্বাস্থ্য, শিক্ষাসহ মৌলিক অধিকারের দাবিতে আন্দোলন ও কর্মবিরতি প্রতি সংহতি জানিয়ে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনের আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী শ্রমিকদল।
চা শ্রমিকদের দাবির প্রতি সংহতি জানিয়ে রিজভী বলেন, শ্রমিকদের দাবি বাস্তবায়নের জন্য সরকারের গুরুদায়িত্ব আছে। কিন্তু সরকারের এখানে কোনো পদক্ষেপ দেখতে পাচ্ছি না। এ মুহূর্তে ১২০ টাকা একজন শ্রমিক মজুরি পায়। অন্য সবকিছু বাদ দিলেও খাদ্যের যে দাম তাতে এ টাকা দিয়ে কি পেটভরে খাওয়াও সুযোগ আছে। আগে বলতো গরিব মানুষ ভর্তা-ভাজি দিয়ে ভাত খায়। এখন ভর্তি-ভাজির দাম অনেক। ভর্তা করতে মরিচ লাগে, তার দাম আকাশ ছুঁই ছুঁই করছে। এখন বলতে হবে কোনো রকম লবণ দিয়ে ভাত খাওয়া। কিন্তু সেই ভাত কেনারও সমর্থ নেই।
উপস্থিত সবার উদ্দেশে তিনি বলেন, আয়নাঘরের কথা শুনেছেন না? আয়নাঘর এখন ভূতের ঘর, আতঙ্কের ঘর হিসেবে সারাদেশের মানুষের মুখে মুখে। আমরা যারা বিরোধীদলের রাজনীতি করি, সরকারের অন্যায়, অবিচার, গুম, খুনের সমালোচনা করি তারা আতঙ্কে থাকি। সরকারের বিরুদ্ধে কথা বললে তাদের ধরে নিয়েই অত্যাচার করা হয়, নির্যাতন করা হয়, নির্যাতনের মাত্রা বীভৎস। এত রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশে আয়নাঘর হওয়ার কথা ছিল না। এ ঘরে তো বিরোধী দলীয় নেতা নিয়ে অত্যাচার করার কথা ছিল না।