বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব সেতুর উদ্বোধন আজ

দক্ষিণাঞ্চলের আরেক স্বপ্ন বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব অষ্টম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতু আজ উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পিরোজপুরের কঁচা নদীর বেকুটিয়া পয়েন্টে যান চলাচলের জন্য সেতুটি (০৫ সেপ্টেম্বর) ১২টা ০১ মিনিটে উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে।

জানা গেছে, রোববার (০৪ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টায় গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধন করবেন সেতুটি।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পিরোজপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহেদুর রহমান। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।

সেতু উদ্বোধনকে কেন্দ্র করে দক্ষিণাঞ্চলে সাজ সাজ রব বিরাজ করছে। এই সেতুর ফলে বরিশাল-ঝালকাঠি-পিরোজপুর-বাগেরহাট-খুলনা-যশোর অঞ্চলের কয়েক লাখ মানুষের জীবনযাত্রা বদলে যাবে। এছাড়া বরিশাল বিভাগের সঙ্গে খুলনা বিভাগের নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগ স্থাপনসহ পায়রা সমুদ্র বন্দর, মংলা বন্দর ও বেনাপোল স্থলবন্দরকে সরাসরি সড়কের সঙ্গে সংযুক্ত করবে। তবে সারাদেশ থেকে নির্বিঘ্নে আরামদায়ক ভ্রমণের মূল কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠবে সমুদ্র সৈকত কুয়াকাটা।

সেতুর প্রকল্প ব্যবস্থাপক মাসুদ মাহমুদ সুমন জানান, ২০১৮ সালের ২০ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বেকুটিয়া পয়েন্টে এই সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। এ বছর ‘চায়না রেলওয়ে ১৭তম ব্যুরো গ্রুপ কোম্পানি লিমিটেড’ নামে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের আওতায় ‘চায়না রেলওয়ে মেজর ব্রিজ রিকোনিসেন্স ডিজাইন ইনস্টিটিউট’ এই সেতু নির্মাণ করেছে। গত ৭ আগস্ট চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ইর উপস্থিতিতে ঢাকায় চীনা দূতাবাসের ইকনোমি মিনিস্টার বাংলাদেশের সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে সেতুটি হস্তান্তর দলিলে স্বাক্ষর করেন।

তিনি আরও জানান, প্রায় এক কিলোমিটার মূল সেতুর উভয় প্রান্তে ৪৯৫ মিটার ভায়াডাক্টসহ সেতুটির দৈর্ঘ্য প্রায় ১৫০০ মিটার। ৯টি স্প্যান ও ৮টি পিলার বিশিষ্ট ১৩.৪০ মিটার প্রস্থের এই সেতুর পিরোজপুর ও বরিশাল প্রান্তে ১ হাজার ৪৬৭ মিটার সংযোগ সড়কসহ পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা নির্বিঘ্নে রাখতে আরও ২টি ছোট সেতু ও বক্স কালভার্ট নির্মাণ করা হয়েছে। এ সেতু নির্মাণে খরচ হয়েছে ৮৯৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৬৫৪ কোটি টাকা অনুদান দিয়েছে চীন সরকার। বাকি ২৪৪ কোটি টাকা দিয়েছে বাংলাদেশ। সেতুটি ১০টি পিলার এবং ৯টি স্প্যানের ওপর দাঁড়িয়ে আছে। এটি বক্স গার্ডার টাইপের সেতু। মূল সেতুর দৈর্ঘ্য ৯৯৮ মিটার এবং অ্যাপ্রোচ সেতুর দৈর্ঘ্য ৪৯৫ মিটার। এছাড়া সেতুর দুই পাড়ে রয়েছে ১ হাজার ৪৬৭ মিটার অ্যাপ্রোচ সড়ক।