শান্তি মিছিল ও সমাবেশে ঢাকা-১৭ আসনের বিশাল শোডাউন

বিএনপি-জামায়াত উগ্র সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠির সন্ত্রাস ও ভয়াবহ নৈরাজ্য সৃষ্টির প্রতিবাদে ‘শান্তি সমাবেশ ও মিছিল’ কর্মসূচি পালন করেছে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ। উক্ত কর্মসূচি সফল করতে ঢাকা-১৭ আসনের পক্ষে এক বিশাল শোডাউন নিয়ে সমাবেশে যোগ দেন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. ওয়াকিল উদ্দিন। প্রায় অর্ধ লক্ষাধিক জনতার অংশগ্রহণে মিছিলটি জনসমুদ্রে রূপ নেয়।

শনিবার (৫ নভেম্বর) রাজধানীর বাড্ডা ইউলুপ এলাকায় এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

দুপুর থেকে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের বিভিন্ন থানা, ওয়ার্ড ও ইউনিট নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে কর্মসূচিতে আসতে শুরু করে। ব্যানার, ফেস্টুনসহ ঢোলবাদ্য বাজিয়ে নেতাকর্মীরা যোগ দেন শান্তি সমাবেশ ও মিছিলে। মিছিল শুরুর আগেই মেরুল বাড্ডা, রামপুরা, ডিআইটি সড়কে অবস্থান নেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। ছিল না তিল ধারণের জায়গা। রামপুরা থেকে বাড্ডা, মধ্য বাড্ডা, মেরুল বাড্ডা পর্যন্ত দলীয় নেতাকর্মীতে পরিপূর্ণ হয়ে যায়। মিছিল ছড়িয়ে পড়ে নতুন বাজার পর্যন্ত। লাখো জনতার অংশগ্রহণে মুখরিত হয়ে ওঠে রাজধানীর গুলশান এলাকা। ঢাকার মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. ওয়াকিল উদ্দিনের নেতৃত্বে প্রায় অর্ধ লক্ষাধিক জনতার মিছিলসহ সমাবেশে যোগ দিতে দেখা যায়।

এসময় ওবায়দুল কাদের বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘এখন ছাড় দিচ্ছি। কিন্তু ডিসেম্বর মাসে ছাড় দেওয়া হবে না। ডিসেম্বর মাসে ছাড়ব না। এই রাজপথ বিজয়ের মাসে আওয়ামী লীগের দখলেই থাকবে। এই রাজপথ মুক্তিযুদ্ধের মাসে বিএনপির থাকবে না। এই রাজপথ আওয়ামী লীগের রাজপথ, মুক্তিযুদ্ধের রাজপথ, বিজয়ের মাসের রাজপথ, বিজয়ের চেতনার রাজপথ।’

ডিসেম্বরে খেলা হবে উল্লেখ করে বিএনপির উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন ছাড়া ক্ষমতায় যাওয়ার চিন্তা ভুলে যান। নির্বাচন করে আসতে হবে। তত্ত্বাবধায়কের ভূত মাথা থেকে নামান। এটি সর্বোচ্চ আদালত নিষিদ্ধ করে দিয়েছে। আমাদের কোনো দোষ নেই। তত্ত্বাবধায়ক আর আসবে না। ওইটা জাদুঘরে চলে গেছে।’

‘খেলা হবে’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘মোকাবিলা হবে। আন্দোলনে হবে। নির্বাচনে হবে। খেলা হবে ভোট চুরি, দুর্নীতি, লুটপাট ও দুঃশাসনের বিরুদ্ধে। খেলা হবে খুনিদের বিরুদ্ধে, ১৫ আগস্টের খুনিদের বিরুদ্ধে। খেলা হবে ২১ আগস্টের মাস্টারমাইন্ড বিএনপির বিরুদ্ধে।’

ঢাকার শান্তি সমাবেশে বিশাল জনস্রোত হয়েছে দাবি করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এখানে এসে বরিশালের কথা ভাবছি। বিএনপি টাকা পয়সা দিয়ে কয়েক দিন আগ থেকেই লোক জমায়েত করেছে দাবি করে তিনি বলেন, ফখরুল সাহেব ছয় জেলার লোক টাকা পয়সা দিয়ে দুই চার দিন আগ থেকে বরিশালে জমায়েত করেছেন। আর এখানে ছয় থানার লোক। বরিশালের চেয়েও দ্বিগুণ লোক এখানে।’

ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমানের সভাপতিত্বে ও ঢাকা মহানগর উত্তরের সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচির পরিচালনায় শান্তি সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, ঢাকা-১১ আসনের এমপি এ কে এম রহমতুল্লাহ, উত্তর মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শবনম জাহান শিলা এমপি, ঢাকা উত্তর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল হক রানা, বাড্ডা থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এ এম জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ।

দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম বলেন, ‘বিএনপি জামাতের সব অপশক্তিকে মোকাবিলা করব। যারা খুনের রাজনীতি কায়েম করতে চায় তাদেরকে ঢাকাবাসী মোকাবিলা করবে।’

দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, ‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ফাইনাল খেলা আগামী ডিসেম্বর মাসে। আজকের এই মিছিল হচ্ছে ওয়ার্ম আপ। অগণতান্ত্রিক শক্তিকে ক্ষমতা থেকে টেনে ফেলার ইতিহাস রয়েছে আমাদের। বিএনপি, জামাত-শিবিরসহ যেসব শক্তি গণতন্ত্র হত্যা করতে চায় আওয়ামী লীগ তাদের প্রতিহত করবে।’