টানা প্রায় ১০ মাস ধরে ইউক্রেনে ধ্বংসাত্মক যুদ্ধে লিপ্ত রাশিয়া। এই পরিস্থিতিতে সামনে এসেছে খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব বড়দিন। এ উপলক্ষে অনেকে পূর্ব ইউরোপের এই দেশটিতে চলমান এই যুদ্ধে একটি বিরতি আশা করলেও তা নাকচ করে দিয়েছে মস্কো।
রাশিয়া বলছে, আসন্ন বড়দিন উপলক্ষে ইউক্রেনে কোনো যুদ্ধবিরতির পরিকল্পনা নেই। বৃহস্পতিবার (১৫ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সর্বশেষ একজন আমেরিকানসহ আরও কয়েক ডজন বন্দীর মুক্তি দেওয়া হয়েছে। এতে বোঝা যায়, দুই পক্ষের মধ্যে কিছু যোগাযোগ রয়ে গেছে। তবে রাশিয়া এবং ইউক্রেন বর্তমানে যুদ্ধের অবসান ঘটাতে কোনো ধরনের আলোচনায় জড়িত নয়।
মূলত বর্তমানে ইউক্রেনের পূর্ব ও দক্ষিণে যুদ্ধ চলছে এবং বুধবার যুদ্ধের গোলা আবারও কিয়েভে পৌঁছেছে। চলতি বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়া তার প্রতিবেশী দেশটিতে আক্রমণ করার পর থেকে হাজার হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন। এছাড়া লক্ষাধিক মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন এবং শহরগুলো ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।
বুধবার দেওয়া এক ভিডিও বার্তায় ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, যুদ্ধক্ষেত্রে কোনো শান্ত পরিস্থিতি নেই। রাশিয়ার গোলাবর্ষণে পূর্বাঞ্চলীয় শহরগুলো ধ্বংস করার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন: ‘রুশ হামলার শিকার এসব শহরগুলোতে এখন কেবল ধ্বংসাবশেষ এবং গর্তগুলো থেকে যাচ্ছে।’
জেলেনস্কি এই সপ্তাহে বলেছেন, চলমান সংঘাতের অবসানের একটি পদক্ষেপ হিসাবে রাশিয়ার উচিত ক্রিসমাসের মধ্যেই ইউক্রেন থেকে সেনা প্রত্যাহার শুরু করা। তবে মস্কো এই প্রস্তাব সরাসরি প্রত্যাখ্যান করে বলেছে, কোনো অগ্রগতি করার আগে ইউক্রেনকে অবশ্যই রাশিয়ার কাছে ভূখণ্ড হারানোর বিষয়টি মেনে নিতে হবে।
অবশ্য শান্তি আলোচনার অনুপস্থিতি সত্ত্বেও সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে শত শত বন্দিকে অদলবদল করে মুক্ত করা হয়েছে। বন্দি মুক্তির এসব ঘটনায় বোঝা যায়, উভয় পক্ষ বেশ কয়েকটি স্তরে কমপক্ষে সীমিত যোগাযোগ বজায় রেখেছে।
বন্দি মুক্তির সর্বশেষ ঘটনায় একজন মার্কিন নাগরিকও অন্তর্ভুক্ত রয়েছেন বলে কিয়েভ এবং ওয়াশিংটন বুধবার জানিয়েছে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট প্রশাসনের প্রধান আন্দ্রি ইয়ারমাক মুক্তিপ্রাপ্ত ওই আমেরিকানকে সুয়েদি মুরেকেজি নামে চিহ্নিত করেছেন।
তিনি রাশিয়ার হাতে আটক হওয়ার আগে ‘আমাদের জনগণকে সহায়তা করেছিলেন’ বলে জানান আন্দ্রি ইয়ারমাক। ওয়াশিংটন পোস্ট বলেছে, উগান্ডায় জন্মগ্রহণকারী মুরেকেজি ছিলেন মার্কিন বিমান বাহিনীর একজন অভিজ্ঞ সদস্য।
হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা মুখপাত্র জন কিরবি গোপনীয়তার উদ্বেগের কারণে মুক্তিপ্রাপ্ত আমেরিকান নাগরিকের নাম বলেননি। তবে কিরবি সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘আমরা অবশ্যই এই সংবাদকে স্বাগত জানাই।’