ইজতেমা মাঠ পরিদর্শনে গিয়ে আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেছেন, গাজীপুরের টঙ্গী ইজতেমায় বিদেশি মুসুল্লী যারা আসেন তাদেরকে এয়ারপোর্টে আয়োজকরা রিসিভ করে থাকেন। বিদেশি মুসুল্লীরা যাতে স্বাচ্ছ্যন্দে আসতে পারেন সেজন্য ইমিগ্রেশন থেকে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়ে থাকে। ইমিগ্রেশনে যেন কোনো জটিলতার সম্মুখীন হতে না হয়, আসার পথে তাদের ট্রাফিক ব্যবস্থা যাতে সুগম হয় সেজন্য আমরা ব্যবস্থা রেখেছি। তাদের সহায়তার জন্য বিশেষ প্রশিক্ষিত টুরিস্ট পুলিশ নিয়োজিত থাকবে।
বুধবার (১১ জানুয়ারি) বেলা ১১টায় গাজীপুরের টঙ্গীতে ইজতেমা মাঠ পরিদর্শনে এসে মাঠের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, সাধারণ মানুষের ইজতেমা মাঠে প্রবেশের সুবিধার্থে আমরা ম্যাপ তৈরি করে দিয়েছি। বিভিন্ন পয়েন্টেও আমরা তাদের জন্য বিভিন্ন প্রকারের নির্দেশনা টাঙিয়ে দিয়েছি। এছাড়াও বিভিন্ন পরিকল্পনা করে কোন বিভাগের গাড়ি কোথায় পার্কিং করা থাকবে, কোন রাস্তা কখন খোলা বা বন্ধ খাকবে সেই নির্দেশনা দিয়েছি। পকেটমারসহ নানা অপরাধ কার্যকলাপ রুখতে আমাদের পেট্টোল টিম কাজ করবে। আমরা ওয়াচ টাওয়ার ও সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ করব। সাদা পোশাক ও পোশাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়োজিত থাকবে। গাজীপুর মেট্টোপলিটন পুুলিশ বিভাগ ১৪টি কন্ট্রোলরুম তৈরি করেছে। র্যাবের কন্ট্রোল রুম থাকবে, ডিএমপি তার এলাকায় কন্ট্রোল রুম খুলবে, এসবি, এটিও, সিআইডি, নৌপুলিশ, অবজারভারভেশন টিম থাকবে, র্যাবের হেলিকপ্টার টহল থাকবে। ডগ স্কোয়াড টিম, মোবাইল পেট্টোল টিম, বোম ডিস্পোজাল টিম থাকবে। মোনাজাতের দিন সুষ্ঠুভাবে আখেরি মোনাজাত ও জুমার নামাজ যাতে মুসুল্লীরা সুষ্ঠুভাবে অংশ নিতে পারে সেজন্য সকল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দায়িত্ব পালন করবে। আমরা সাধারণ মানুষকে আশ্বস্ত করতে চাই আপনারা নির্ভয়ে ইজতেমায় অংশ নিতে পারেন।
ইজতেমা স্থলে যে ৯১টি খিত্তায় বিভক্ত, খিত্তাভিক্তিক আমাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ, র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ানের (র্যাব) পাশাপাশি ঢাকা মেট্টোপলিটন পুলিশ, স্পেশাল ব্রাঞ্চ, সিআইডি, নৌপুলিশ, এন্টিট্যারিজম ইউনিট, রেলওয়ে পুলিশ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দায়িত্ব পালন করছে। এর সঙ্গে সরকারের অন্যান্য বিভাগও সমন্বিতভাবে কাজ করছে। আমরা একই সঙ্গে সবাই মিলে একযোগে কাজ করছি, যাতে মুসুল্লীরা শান্তিপূর্ণভাবে এই আয়োজনে শরীক হতে পারেন। এর জন্যই আমরা সমন্বয়ের মাধ্যমে কাজ করছি। আমাদের আশা ইতোপূর্বে আমরা যেভাবে সফল হয়েছি, এর ধারাবাহিকতায় এবারও আমরা এই আয়োজন সফল করব। ইতোধ্যেই আমাদের ফোর্স আসা শুরু হয়েছে, আগামীকাল থেকে পুরোপুরি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাজ শুরু হবে।
নির্বাচন অনুষ্ঠানে পুলিশের ভূমিকার বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা সবসময় বলে থাকি পুলিশ লাইফ ইজ দ্যা চ্যালেঞ্জিং লাইফ। কোনদিন কোন চ্যালেঞ্জ থাকবে তা অজানা থাকে। এরপরও প্রতিদিনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা আমরা করে থাকি। দীর্ঘদিন চাকরি করার পর আমাদের অভিজ্ঞতা হয়েছে। এ অভিজ্ঞতার আলোকে আমাদের আইনশৃঙ্খলাজনিত যে কোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করার মতো সক্ষমতা, দক্ষতা ও প্রশিক্ষণ রয়েছে। এটা দিয়েই আমরা আগামী দিনের যেকোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সক্ষম। দেশবাসীকে আমরা আশ্বস্ত করতে চাই বাংলাদেশ পুলিশের যে সক্ষমতা রয়েছে তা দিয়ে আমরা জঙ্গীবাদসহ যেকোনো চ্যালেঞ্জে সফল হয়েছি। এর মাধ্যমে আমরা সাধারণ মানুষের মধ্যে আস্থার জায়গা তৈরি করতে পেরেছি। এই আস্থাকে ধরে রাখতে আমরা প্রস্তুত রয়েছি।
ইজতেমা মাঠ পরিদর্শনে আইজিপি’র পরিদর্শনের উপস্থিত বাংলাদেশ পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক স্পেশাল ব্রােঞ্চের প্রধান মনিরুল ইসলাম, অতিরিক্ত আইজিপি ট্যুরিস্ট পুলিশের প্রধান হাবিবুর রহমান, গাজীপুর মেট্টোপলিটন পুলিশ কমিশনার নজরুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার দেলোয়ার হোসেন ও গাজীপুর পুলিশ সুপার কাজী শফিকুল আলম প্রমুখ।