দীর্ঘ প্রতীক্ষা ও অনিশ্চয়তার পর অবশেষে বিশ্বের সর্ববৃহৎ সামরিক জোট ন্যাটোতে যোগ দিতে যাচ্ছে সুইডেন। এক বছরেরও বেশি সময় আগে ন্যাটোর সদস্যপদ পেতে আবেদন করেছিল দেশটি। কিন্তু তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের আপত্তির কারণে সুইডেনের সদস্যপদ থমকে ছিল।
তবে সোমবার (১০ জুলাই) ন্যাটো মহাসচিব জেনস স্টলটেনবার্গ এক টুইট বার্তায় জানান, এরদোয়ান তার আপত্তি তুলে নিয়েছেন এবং জানিয়েছেন, সুইডেনের সদস্যপদকে সমর্থন জানাবেন তিনি। আর দেশটির সদস্যপদের চূড়ান্ত অনুমোদন দিতে এ সংক্রান্ত আইন দ্রুততম সময়ের মধ্যে তুরস্কের সংসদে পাঠাবেন। স্টলটেনবার্গ বিষয়টিকে ‘ঐতিহাসিক’ হিসেবে অভিহিত করেছেন।
সোমবার লিথুয়ানিয়ার রাজধানী ভিলনিয়াসে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান এবং সুইডেনের প্রধানমন্ত্রী উলফ ক্রিস্টারসনের সঙ্গে বৈঠকে বসেন ন্যাটো মহাসচিব স্টলটেনবার্গ। এরপরই এরদোয়ান তার মত পাল্টাতে সম্মত হন। ন্যাটোর বার্ষিক সম্মেলনে যোগ দিতে তারা লিথুয়াানিয়াতে অবস্থান করছেন।
রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা করার পর— গত বছরের ১৭ মে ন্যাটোতে যোগ দিতে আনুষ্ঠানিকভাবে আবেদন করে ফিনল্যান্ড ও সুইডেন। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর ২০২৩ সালের ৩১ মার্চ ফিনল্যান্ডের সদস্যপদকে চূড়ান্ত অনুমোদন দেয় তুরস্ক।
কিন্তু সুইডেনের আবেদন আটকে রাখে দেশটি। তুরস্কের অভিযোগ ছিল, সুইডেন কুর্দি জঙ্গি ও সন্ত্রাসী গোষ্ঠী পিকেকে-কে মদদ ও সহায়তা করে। এ কারণে তুরস্ক শর্ত জুড়ে দেয়, সুইডেনকে এসব সন্ত্রাসীকে সহায়তা বন্ধ করতে হবে; এরপর তারা ন্যাটোর সদস্যপদ পাবে।
এদিকে এর আগে সোমবারই তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান হঠাৎ করে শর্ত দেন, তুরস্ককে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য করে নেওয়ার কার্যক্রম যদি আবারও শুরু করা হয়; তাহলে তিনি সুইডেনের ন্যাটো সদস্যপদের অনুমোদনের বিল সংসদে পাঠাবেন। এরপরই জানা গেল, তিনি সুইডেনকে ন্যাটোতে যুক্ত করে নিতে সম্মত হয়েছেন। তবে তার এ শর্ত পশ্চিমারা মেনে নিয়েছে কিনা সে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
এরদোয়ানের রাজি হওয়ার বিষয়ে ন্যাটো মহাসচিব সাংবাদিক সম্মেলনে বলেছেন, ‘আমি আনন্দের সঙ্গে ঘোষণা করছি… প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান সুইডেনের সদস্যপদের আবেদন সংসদে পাঠাতে এবং দ্রুত সময়ের মধ্যে এটির অনুমোদন দিতে সম্মত হয়েছেন।’
সূত্র: আল জাজিরা