৩৬ মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীর পরিচয়

মো.রাকিব মোরতাজা, সিনিয়র রিপোর্টার

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনের পর টানা চতুর্থবারের মতো সরকার গঠন করেছে আওয়ামী লীগ। ১০ জানুয়ারী ২০২৩, বুধবার সকাল ১০ টায় নতুন সংসদ সদস্যরা (এমপি) শপথ গ্রহণ করে এবং ১১ জানুয়ারী বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টায় বঙ্গভবনে নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যরা শপথ নেয়। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন প্রথমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে শপথবাক্য পাঠ করান। এরপর মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীদের শপথ করান তিনি।

নতুন সরকারের ২৫ জন মন্ত্রী ও ১১ জন প্রতিমন্ত্রীর দপ্তর বণ্টন করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করবেন। আর মন্ত্রীদের মধ্যে আ ক ম মোজাম্মেল হক মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়, ওবায়দুল কাদের- সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়, আবুল হাসান মাহমুদ আলী- অর্থ মন্ত্রণালয়, আনিসুল হক- আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়, নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন- শিল্প মন্ত্রণালয়, আসাদুজ্জামান খান (কামাল)- স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, মো. তাজুল ইসলাম- স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়, মুহাম্মদ ফারুক খান- বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন বিষয়ক মন্ত্রণালয়, মোহাম্মদ হাছান মাহমুদ- পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, ডা. দীপু মনি- সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়, সাধন চন্দ্র মজুমদার- খাদ্য মন্ত্রণালয়, আব্দুস সালাম- পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়, মো. ফরিদুল হক খান- ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়, র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী- গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, নারায়ণ চন্দ্র চন্দ- ভূমি মন্ত্রণালয়, জাহাঙ্গীর কবির নানক- বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়, মো. আব্দুর রহমান- মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়, মো. আব্দুস শহীদ- কৃষি মন্ত্রণালয়, স্থপতি ইয়াফেস ওসমান- বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, ডা. সামন্ত লাল সেন- স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়, মো. জিল্লুল হাকিম- রেলপথ মন্ত্রণালয়, মো. ফরহাদ হোসেন- জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, নাজমুল হাসান (পাপন)- যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়, সাবের হোসেন চৌধুরী- পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও মহিবুল হাসান চৌধুরী- শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন।

অন্যদিকে ১১ জন প্রতিমন্ত্রীর মধ্যে নসরুল হামিদ- বিদ্যুৎ বিভাগ, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী- নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়, জুনাইদ আহমেদ পলক- ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, জাহিদ ফারুক- পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়, সিমিন হোমেন রিমি- মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়, কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা- পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়, মো. মহিববুর রহমান- দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়, মোহাম্মদ আলী আরাফাত- তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়, শফিকুর রহমান চৌধুরী- প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, রুমানা আলী- প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় ও আহসানুল ইসলাম (টিটু)- বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন।

মন্ত্রীদের পরিচয়:

আ ক ম মোজাম্মেল হক: আ.ক.ম. মোজাম্মেল হক ১৯৪৬ সালের ১লা অক্টোবর গাজীপুর সদর উপজেলার দাখিণ খান গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম আনোয়ার আলী ও মাতার নাম রাবেয়া খাতুন।তিনি রাণী বিলাসমনি সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় এর একজন কৃতি শিক্ষার্থী ছিলেন।তিনি ছাত্রাবস্থায় পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ও সহ-সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি তৎকালীন গাজীপুর মহকুমা ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় তিনি গাজীপুরের প্রতিরোধ যুদ্ধে অংশ নিয়ে সশস্ত্র প্রতিরোধ কমিটির আহবায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।তিনি ১৯ মার্চ গাজীপুর থেকে সশস্ত্র সংগ্রামের নেতৃত্ব দেন।বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের পর ১৯৭৬ সাল থেকে তিনি গাজীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।১৯৭৩ থেকে ১৯৮৬ পর্যন্ত গাজীপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান, ১৯৮৯ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত গাজীপুর পৌরসভার চেয়ারম্যান ও মেয়র পদে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ২০০৮ সালে পৌর মেয়রের পদ থেকে পদত্যাগ করে গাজীপুর-১ আসন থেকে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে জয়ী হন। এরপর ২০১৪ ও ২০১৯ সালে গাজীপুর-১ আসন থেকে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে বিজয়ী হন।এ সময় তিনি সরকারের ভূমি মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।তিনি ১১ ডিসেম্বর ২০১৮ থেকে ৬ জানুয়ারি ২০১৯ পর্যন্ত বাংলাদেশ সরকারের ধর্মমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।সর্বশেষ তিনি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালযয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি ৪র্থ বরের মত সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ের পর তাকে পূণরায় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্ব  দেওয়া হয়।

ওবায়দুল কাদের: ওবায়দুল কাদের ১৯৫২ সালের ১ জানুয়ারি নোয়াখালী জেলার কোম্পানীগঞ্জ থানার বড় রাজাপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।তার পিতার নাম মোশাররফ হোসেন এবং মাতা ফজিলাতুন্নেছা।তার বাবা মোশাররফ হোসেন কলকাতার ইসলামিয়া কলেজে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহপাঠী ছিলেন।ওবায়দুল কাদের স্থানীয় বসুরহাট এ এইচ সি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক,  নোয়াখালী সরকারি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন।ওবায়দুল কাদের নোয়াখালী কলেজে অধ্যায়নরত অবস্থায় ছাত্র রাজনীতির সাথে যুক্ত হন। তিনি ১৯৬৬ সালে ৬ দফা আন্দোলন এবং ১৯৬৯ সালে গণআন্দোলন ও ছাত্রদের ১১ দফা আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন।১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর তিনি মুজিব বাহিনীর (বিএলএফ) কোম্পানীগঞ্জ থানা শাখার অধিনায়ক হিসেবে যুদ্ধে অংশ নেন।১৯৭৫ সালে শেখ মুজিবুর রহমান হত্যাকাণ্ডের পর তিনি ৫ বছর কারাবন্দী ছিলেন। কারাগারে থাকা অবস্থায় তিনি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি নির্বাচিত হন এবং দুই মেয়াদে সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।ওবায়দুল কাদের ১৯৯৬ সালে সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নোয়াখালী-৫ আসন থেকে জয়লাভ করে প্রথমবারেরমত সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এ নির্বাচনে জয়লাভ করে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে। এ সময়  তিনি যুব, ক্রীড়া ও সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। ২০০১ সালের অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি পরাজিত হন। ২০০২ সালে তিনি দলের প্রথম যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন এবং ২০০৯ সালের ২৬ জুলাই পর্যন্ত এ দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৮ সালে তিনি নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আবারও সংসদ সদস্য  নির্বাচিত হন। ২০০৯ সালে তিনি দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম ‘সভাপতিমন্ডলীর সদস্য’ নির্বাচিত হন।২০১১ সালে  তিনি যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের (বর্তমান সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়) মন্ত্রীর দায়িত্ব পান।২০১৪ সালে দশম এবং ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি জয়লাভ করেন এবং পূনরায় সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রীর দায়িত্ব পান। ২০১৬ সালে আওয়ামী লীগের ২০তম জাতীয় সম্মেলনে তিনি সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।এরপর ২০১৯ সালে ২১তম জাতীয় সম্মেলন এবং ২০২২ সালের ২৪ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের ২২তম জতীয় সম্মেলনে টানা তৃতীয়বারের মত সাধারণ সম্পাদক পদে পুনঃনিবার্চিত হন তিনি, যা আওয়ামী লীগের ইতিহাসে প্রথম। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি ৫ম বরের মত সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন্।দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ের পর তাকে পূণরায় সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়।

আবুল হাসান মাহমুদ আলী: মাহমুদ আলী ১৯৪৩ সালের ২ জুন বাংলাদেশের দিনাজপুরের খানসামার ডাক্তারপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে ১৯৬২ সালে বি.এ. এবং ১৯৬৩ সাল এম.এ. ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৯৬৪ থেকে ১৯৬৬ পর্যন্ত অর্থনীতির প্রভাষক ছিলেন।বিভিন্ন দেশে কুটনৈতিক দ্বায়িত্ব পালন শেষে দেশে ফেরার পর মাহমুদ আলী ২০০১ সালে আওয়ামী লীগে যোগ দেন এবং আওয়ামী লীগের নির্বাচনী কমিটির সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০২ সালে তিনি কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা কমিটির সদস্য হন। এরপর তিনি আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপকমিটির কো চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।তিনি ২০০৮ সালে  দিনাজপুর ৪ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি ৯ম জাতীয় সংসদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ছিলেন। তিনি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।সর্বশেষ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি আবারও সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন্। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ের পর তাকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়।

আনিসুল হক: আনিসুল হক ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবার পানিয়ারূপ গ্রামে ৩০ মার্চ ১৯৫৬ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম সিরাজুল হক (বাচ্চু মিয়া) এবং মাতা জাহানারা হক।।তার পিতা বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ছিলেন। তিনি  ঢাকার সেন্ট জোসেফ হাই স্কুল থেকে ও-লেভেল , ব্রিটিশ কাউন্সিল বাংলাদেশের মাধ্যমে এ-লেভেল ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি সাহিত্য থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি পাস করে মেধা তালিকায় প্রথম স্থান অর্জন করেন এবং লন্ডনের কিংস কলেজ থেকে এলএলএম পাস করেন।তিনি ১৯৮৫ সালের নভেম্বর মাসে ঢাকা জেলা আইনজীবী এবং ১৯৮৭ সালের নভেম্বরে বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে আইনজীবী হিসাবে তালিকাভুক্ত হন। ২০০১ সালে তিনি আইনজীবী হিসাবে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে যুক্ত হন এবং ২০১০ সালে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী হন। তিনি ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ আসন থেকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসাবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পান।২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে  তিনি একই আসন থেকে আবারও সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং পুনরায় আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রীর দায়িত্ব পান। সর্বশেষ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি আবারও সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন্।দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ের পর তাকে পূনরায় আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়।

নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন: নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন  ১৬ ডিসেম্বর ১৯৫০ সালে জন্মগ্রহণ করেন।তার  পৈতৃক বাড়ি নরসিংদী জেলার মনোহরদী উপজেলার গোতাশিয়ার বাগানবাড়ী এলাকায়। তিনি মনোহরদীর ঐতিহ্যবাহী মজিদ পরিবারের সন্তান।তার বাবার নাম এ্যাডভোকেট এম.এ.মজিদ ও মাতা নূর বেগম। তার বাবা অবিভক্ত বাংলার ইউনিয়ন বোর্ডের নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ও অনারারি ম্যাজিস্ট্রেট ছিলেন।তিনি ১৯৬৭ সালে ঢাকার সেন্ট গ্রেগরি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক, ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে এমএসএস সহ একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এল.এল.বি ডিগ্রী অর্জন করেন।পেশায় আইনজীবী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন ছাত্রজীবন থেকেই রাজনীতিতে সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন। তিনি  ১৯৮৬ সালে প্রথম নরসিংদী-৪ আসনের এমপি নির্বাচিত হন।পরে তিনি কেন্দ্রীয় আওয়ামী যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন। তারপর ২০০৮ সাল থেকে টানা ২০২৪ সাল পর্যন্ত পরপর চারবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।২০১৯ সাল থেকে তিনি শিল্প মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ের পর তাকে পূনরায় শিল্প মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়।

আসাদুজ্জামান খান কামাল: আসাদুজ্জামান খান ১৯৫০ সালের ৩১ ডিসেম্বর তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের ঢাকা জেলার তেজগাঁও থানার মনিপুরিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম আশরাফ আলী খান ও মাতা আকরামুন নেসা।তার পিতা একজন সরকারী কর্মকর্তা ছিলেন। তিনি পরিবারের দ্বিতীয় সন্তান ছিলেন। তাদের পৈতৃক নিবাস ঢাকা জেলার অন্তর্গত দোহার উপজেলায়।তিনি ১৯৬৫ সালে ঢাকা পলিটেকনিক উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি এবং ১৯৬৭ সালে জগন্নাথ কলেজ থেকে এইচএসসি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএসসি অনার্স ডিগ্রি অর্জন করেন।আসাদুজ্জামান খান মুক্তিবাহিনীর সদস্য ছিলেন। তিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন।তিনি ২০০৮ সালে বাংলাদেশের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে ঢাকা-১১ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি ২০০৯ থেকে ২০১৩ পর্যন্ত গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ২০১৪ সালে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-১২ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।২০১৪ সালে তিনি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসাবে শপথ নেন। ২০১৫ সালে তিনি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পূর্ণ মন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পান।তিনি  ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তৃতীয়বারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং পুনরায় শপথ নিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব গ্রহণ করেন।সর্বশেষ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি ৪র্থ বরের মত সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন্।তিনি বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল ও শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ের পর তাকে পূনরায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়।

মোঃ তাজুল ইসলাম: তাজুল ইসলাম ৩০ জুন ১৯৫৫ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের কুমিল্লার মনোহরগঞ্জের পোমগাঁও গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।তার  পিতা জুলফিকার আলী এবং মাতা আনোয়ারা বেগম। ৭ ভাই বোনের মধ্যে তিনি সবার বড়।তিনি পোমগাঁও উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক ও নওয়াব ফয়জুন্নেছা সরকারী কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রী অর্জন করেন। তিনি সাউদার্ন ইউনিভার্সিটি থেকে মার্কেটিং এবং ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস স্কুল অব স্ক্যান্ডিনেভিয়া থেকে ফিন্যান্সে এমবিএ ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি ১৯৯৬ সালের সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুমিল্লা-১০ আসন থেকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।তিনি ২০০৮ সালের নবম, ২০১৪ সালের দশম ও ২০১৮ সালের একাদশ ও ২০২৪ সালে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুমিল্লা-৯ আসন থেকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।তিনি ২০১৯ থেকে স্থানীয় সরকার বিভাগের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। বিগত জাতীয় সংসদের মেয়াদ গুলিতে তিনি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, অর্থ মন্ত্রণালয় ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। বিদ্যুৎ, জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটিতে তিনি সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।তিনি ফেবিয়ান গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ সহ ২০ টি প্রতিষ্ঠানের সত্ত্বাধিকারী ও যমুনা ব্যাংকসহ ২টি বেসরকারি ব্যাংকের পরিচালক। এছাড়া দৈনিক প্রতিদিনের সংবাদ পত্রিকার প্রকাশক। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ের পর তাকে পূনরায় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়।

লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অবঃ) ফারুক খান: ফারুক খান ১৯৫১ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন।তার পিতার নাম সেরাজুল করিম খান, মা খালেদা করিম খান।তিনি মিরপুরের ডিফেন্স সার্ভিসেস অ্যান্ড স্টাফ কলেজ থেকে ডিফেন্স স্টাডিজে মাস্টার্স করেছেন।ফারুক খান এর আগে আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক পদে ছিলেন। বর্তমানে তিনি  আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।এর আগে বাংলাদেশ সরকারের বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটনমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। সামরিক বাহিনীর চাকরি ছেড়ে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন ৬ বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়া ফারুক খান।দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ের পর তাকে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়।

ড. হাছান মাহমুদ: হাছান মাহমুদ ১৯৬৩ সালের ৫ জুন চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৮৮ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রসায়ন বিষয়ে স্নাতক এবং ১৯৮৯ সালে স্নাতকোত্তর শেষ করেন। তিনি ২০০১ সালে বেলজিয়ামের লিম্বুর্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পরিবেশ রসায়ন বিষয়ে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।তিনি ১৯৭৭ সালে চট্টগ্রাম ওয়ার্ড শাখা ছাত্রলীগে যোগদানের মাধ্যমে ছাত্ররাজনীতি শুরু করেন।তিনি ১৯৮৮ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ১৯৯২ সালে তিনি আওয়ামী লীগে যোগদান করেন। ১৯৯৩ সাল থেকে তিনি বেলজিয়ামে অবস্থানকালে সেখানকার আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেন। এর মধ্যে ১৯৯৫ থেকে ২০০০ সালের মার্চ পর্যন্ত বেলজিয়াম শাখা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। সপ্তম জাতীয় সংসদের সময়কালে ১৯৯৬ থেকে ২০০১ পর্যন্ত তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করেন।২০০১ সালে আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার বিশেষ সহকারী এবং ২০০২ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত দলটির পরিবেশ ও বন বিষয়ক সম্পাদক, ২০১৯ সাল পর্যন্ত তিনি দলের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ছিলেন।বর্তমানে তিনি আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন।তিনি ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রথমবারেরমত সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।এরপর তিনি  পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী, বন ও পরিবেশ  প্রতিমন্ত্রী এবং পরবর্তীতে বন ও পরিবেশ মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।২০১৪ সালে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এবং ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি চট্টগ্রাম-৭ আসন থেকে নির্বাচিত হন। দশম জাতীয় সংসদে তিনি পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। একাদশ জাতীয় সংসদে তিনি তথ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। সর্বশেষ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি আবারও সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন্।দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ের পর তাকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্ব  দেওয়া হয়।

দীপু মনি: দীপু মনি ১৯৬৫ সালের ৮ ডিসেম্বর চাঁদপুর সদর উপজেলার রামপুর ইউনিয়নের কামরাঙ্গা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা একুশে পদক বিজয়ী ভাষা আন্দোলন কর্মী ও রাজনীতিবিদ এম.এ ওয়াদুদ। মাতা রহিমা ওয়াদুদ ছিলেন শিক্ষিকা। তার ২ ভাইবোনের মধ্যে একমাত্র ভাই জে আর ওয়াদুদ টিপু একজন চিকিৎসক।তিনি রাজধানীর হলিক্রস কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস এবং বাংলাদেশ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় হতে এলএলবি পড়েন। এমবিবিএস ডিগ্রি লাভের পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব পাবলিক হেলথ থেকে এমপিএইচ ডিগ্রি অর্জন করেন।এছাড়া তিনি লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন বিষয়ে মাস্টার্স ডিগ্রি ও হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমঝোতা ও দ্বন্দ্ব নিরসন এর ওপর একটি কোর্স সম্পন্ন করেন।তার স্বামী এ্যাডভোকেট তৌফিক নাওয়াজ বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবি ।তিনি আন্তর্জাতিক একটি ল’ফার্মের প্রধান।দীপু মনি ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে চাঁদপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। একই সাথে তিনি বাংলাদেশের প্রথম মহিলা পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ পান। ২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি চাঁদপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন, একই সাথে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ছিলেন। ২০১৬ সালে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের ২০তম কাউন্সিলে তিনি যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে মনোনীত হন।সে থেকে তিনি টানা ৩ বার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন।২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে চাঁদপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। একই সাথে শিক্ষামন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ পান। তিনি বাংলাদেশের প্রথম নারী শিক্ষামন্ত্রী। সর্বশেষ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি ৪র্থ বরের মত সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন্।এছাড়া তিনি বর্তমানে এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেন এর ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারপার্সন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ের পর তাকে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়।

সাধন চন্দ্র মজুমদার: সাধন চন্দ্র মজুমদার ১৭ জুলাই ১৯৫০ সালে নওগাঁ জেলার নিয়ামতপুর উপজেলার শিবপুর গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। তার পিতার নাম কামিনী কুমার মজুমদার ও মাতার নাম সাবিত্রী বালা মজুমদার। নয় ভাই-বোনের মধ্যে সাধন চন্দ্র মজুমদার অষ্টম। ষষ্ঠ শ্রেণিতে থাকাকালে তিনি পিতাকে হারান।তিনি নওগাঁ কেডি সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এস.এস.সি এবং চৌমুহনী সরকারী ডিগ্রী কলেজ থেকে এইচ.এস.সি পাস করেন। তিনি নওগাঁ ডিগ্রী কলেজ থেকে বিএ ডিগ্রী অর্জন করেন। তিনি ১৯৮৪ সালে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে হাজিনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ১৯৯০ সালে তিনি হাজিনগর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। এরপর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন এবং উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।পরবর্তীতে নওগাঁ জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য, দুইবার প্রচার সম্পাদক, সাংগঠনিক সম্পাদক ও দীর্ঘ দিন যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। পরে কাউন্সিলের মাধ্যমে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।তিনি ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে  নওগাঁ-১ (নিয়ামতপুর-পোরশা-সাপাহার) থেকে সংসদ-সদস্য নির্বাচিত হন।তিনি নবম জাতীয় সংসদে ধর্ম মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য ছিলেন। ২০১৪ সালে  দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় তিনি আবারও সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।২০১৮ সালে তিনি নওগাঁ-১ থেকে তৃতীয়বারের মত সংসদ-সদস্য নির্বাচিত হন ও খাদ্য মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে  দায়িত্ব পালন করেন। সর্বশেষ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি আবারও সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন্। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ের পর তাকে পূনরায় খাদ্য মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্ব  দেওয়া হয়।

মেজর জেনারেল (অব.) আবদুস সালাম: আবদুস সালাম ২৮ ফেব্রুয়ারি ১৯৪২ সালে ময়মনসিংহ জেলার নান্দাইল উপজেলার কুমারুলির রসুলপুরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৬২ সালের ২১ এপ্রিল তৎকালীন পাকিস্তান আর্মিতে কমিশন প্রাপ্ত হন। ১৯৮২ সালে মেজর জেনারেল পদে উন্নীত হন। ১৯৯২ সালে তৎকালীন সরকার তাকে বাধ্যতামূলক অবসের পাঠায়। ১৯৯০ সালে এরশাদ পতনে মেজর জেনারেল আবদুস সালামের ভূমিকা অনন্য। তিনি ৩৩ বৎসর চাকুরীর পর ৫৪ বছর বয়সে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগে যোগ দেয়ার মাধ্যমে সক্রিয় রাজনীতিতে যোগদান করেন । তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, জেলা আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য ও ২০০৪ সাল থেকে নান্দাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। ২০২২ সালে উপজেলা সম্মেলন এর মাধ্যমে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ নান্দাইল উপজেলা শাখার সভাপতি হিসেবে পুনরায় নির্বাচিত হন। ১৯৯৬ সালের সপ্তম, ২০০৮ সালের নবম এবং ৭ জানুয়ারী ২০২৪ সালের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে ময়মনসিংহ-৯ (নান্দাইল) আসন থেকে তৃতীয় বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ের পর তাকে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্ব  দেওয়া হয়।

ফরিদুল হক খান: ফরিদুল হক খান ১৯৫৬ সালের ২ জানুয়ারি পূর্ব পাকিস্তানের জামালপুর জেলার ইসলামপুর উপজেলার উত্তর সিরাজাবাদ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম মো: হাবিবুর রহমান খান ও মাতার নাম ফাতেমা খানম। তিনি উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত পড়াশুনা করেছেন।তিনি ২০০৩ সালের ১৭ জুন হতে ২০১৫ সালের ২১ জানুয়ারি পর্যন্ত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, ইসলামপুর উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ২০১৫ সালের ২২ জানুয়ারি দলীয় কাউন্সিলের মাধ্যমে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, ইসলামপুর উপজেলা শাখার সভাপতি হয়ে অদ্যবধি দায়িত্ব পালন করছেন।ফরিদুল হক খান ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি ৯ম জাতীয় সংসদের বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সদস্য ছিলেন। ফরিদুল খান ২০১৪ সালে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পুনরায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি ১০ম জাতীয় সংসদের স্বরাষ্ট মন্ত্রণালয় সম্পকির্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ছিলেন।একাদশ জাতীয় সংসদেও তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে তৃতীয়বারের মত সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। সর্বশেষ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি ৪র্থ বারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।তিনি ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দাযিত্ব পালন করেছেন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ের পর তাকে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়।

র. আ. ম. উবায়দুল মোকতাদির: র. আ. ম. উবায়দুল মোকতাদির  ১৯৫৫ সালের ১ মার্চ তৎকালীন কুমিল্লা জেলার ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জন্মগ্রহণ করেন।তার পিতার নাম মোঃ আব্দুর রউফ চৌধুরী এবং মাতা মোসাম্মৎ হালিমা খাতুন চৌধুরী।এক ভাই এক বোনের মধ্যে তিনি পিতা-মাতার জ্যেষ্ঠ সন্তান।তিনি প্রাথমিক শিক্ষা লাভ করেন চিনাইর ও নারায়ণগঞ্জে। এরপর মাদ্রাসা-ই-আলীয়া ঢাকা থেকে ফাজিল পাস করার পর ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে অনার্স ও মাস্টার্স করেন। তিনি ১৯৬৯ সালে ঢাকা কলেজ ছাত্র সংসদের ছাত্রদের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত প্রথম সাধারণ সম্পাদক।তিনি ১৯৭০ সালে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের সহ-সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।১৯৭৩-৭৪ সালে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক এবং  ১৯৭৫ সালে বাকশাল গঠন হলে ২১ সদস্য বিশিষ্ট জাতীয় ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মনোনীত হন।তিনি ১৯৮৩ সনের বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে প্রশাসন ক্যাডারে যোগদান করেন এবং ১৯৮৬ সালে জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা শেখ হাসিনার একান্ত-সহকারী সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।১৯৯৬ সনে খালেদা জিয়া কর্তৃক একতরফা নির্বাচনের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের অফিসারদের নিয়ে গঠিত জনতার মঞ্চের অন্যতম সংগঠক হিসেবে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ১৯৯৬-২০০১ সাল পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একান্ত সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটিতে দুইবার সদস্য মনোনীত হন এবং বর্তমানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে সফলতার সাথে দায়িত্ব পালন করছেন।তিনি ২০১১ সালে উপনির্বাচনে প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দ্বিতীয়বার এবং সর্বশেষ ২০১৮ সালে  একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীকে পরাজিত করে টানা তিনবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।সর্বশেষ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি আবারও সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন্।তিনি নবম জাতীয় সংসদে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি, দশম সংসদে পার্বত্যচট্টগ্রাম মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবং সর্বশেষ একাদশ জাতীয় সংসদে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি হিসেবে মনোনীত হন।দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ের পর তাকে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়।

নারায়ন চন্দ্র চন্দ: নারায়ন চন্দ্র খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলায় ১৯৪৫ সালের ১২ মার্চ জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম কালীপদ চন্দ ও মাতার নাম রেণুকা বালা চন্দ। নারায়ন চন্দ্র উলাগ্রামের পাঠশালায় তার শিক্ষাজীবন শুরু করে বান্দা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশোনা করেন। ১৯৬১ সালে ডুমুরিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে ম্যাট্রিক্যুলেশন পাশ করেন। ১৯৬৩ সালে দৌলতপুর বিএল কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৬৬ সালে তিনি রাষ্ট্রবিজ্ঞানে অনার্স এবং ১৯৬৭ সালে একই বিষয়ে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী নেন। চাকুরীকরাকালীন সময়ে ১৯৭২ সালে তিনি বিএড পাশ করেন।তিনি সাহস নোয়াকাটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। ১৯৭৩ সালের ৭ মে ডুমুরিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পান। তিনি ২০০৫ সালের ১১ মার্চ চাকরি থেকে অবসর নেন। তিনি ১৯৬৮ সালে মাধ্যমিক শিক্ষকদের ঐক্যবদ্ধ করতে প্রতিষ্ঠা করেন থানা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি। তিনি প্রতিষ্ঠাকালিন সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ১৯৮৪ সালে ডুমুরিয়া থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৯৫ সালে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। সর্বশেষ ২০০৩ সালে গঠিত কমিটিতেও তিনি সভাপতি নির্বাচিত হন। তিনি আওয়ামী লীগ খুলনা জেলা শাখার সদস্য। তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী মৎস্যজীবী লীগের কেন্দ্রীয় আহবায়ক ছিলেন।তিনি ছয় মেয়াদে ডুমুরিয়া উপজেলার ভান্ডারপাড়া ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হন। ২০০০ সালের ২০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত উপ-নির্বাচনে নারায়ন চন্দ্র চন্দ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়নে খুলনা-৫ (ডুমুরিয়া-ফুলতলা) আসনে প্রথমবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।২০০৮ সালের নবম সংসদ নির্বাচনে ও  ২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি  খুলনা-৫ আসন থেকে তৃতীয়বারের মত সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ প্রতিমন্ত্রী ও  মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।সর্বশেষ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি আবারও সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন্।দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ের পর তাকে ভূমি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়।

জাহাঙ্গীর কবির নানক: জাহাঙ্গীর কবির নানকের জন্ম ১৪ জানুয়ারি ১৯৫৪ সালে। তার পৈতৃক বাড়ি বরিশাল জেলার সদর উপজেলার খিরদ মুখার্জী লেন এলাকায়। তিনি আইন বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেছেন। জাহাঙ্গীর কবির নানক যুবলীগের সাবেক চেয়ারম্যান ও ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। তিনি ২০০৮ ও ২০১৪ সালের নির্বাচনে ঢাকা-১৩ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।তিনি ২০০৯ সালে শেখ হাসিনার দ্বিতীয় মন্ত্রিসভায় স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।বর্তমানে তিনি  বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য হিসেবে আছেন।সর্বশেষ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি ৩য় বারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ের পর তাকে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়।

মো: আব্দুর রহমান: আব্দুর রহমানের জন্ম ১ জানুয়ারি ১৯৫৪ সালে ফরিদপুর জেলার মধুখালী উপজেলার কামালদিয়া গ্রামে। তিনি আইন বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেছেন। আব্দুর রহমান ২০০৮ সালের নবম, ২০১৪ সালের দশম ও ২০২৪ সালে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে ফরিদপুর-১ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।তিনি ছাত্রলীগের নেতা ছিলেন। পরে আওয়ামী লীগের  যুগ্ন সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন।বর্তমানে তিনি সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য হিসেবে আছেন।দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ের পর তাকে  মৎস্য ও প্রাণি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়।

আব্দুস শহীদ: আব্দুস শহীদ ১৯৪৮ সালের ১ জানুয়ারি মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জের রহিমপুরের সিদ্বেশ্বরপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম আব্দুল বারী এবং মাতা সাজেদা খানম। ৮ ভাই ৩ বোনের মধ্যে তিনি তৃতীয়। তার ছোট ভাই ইফতেখার আহমেদ বদরুল রহিমপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান। তার বড় মেয়ে উম্মে ফারজানা শ্রীমঙ্গল উপজেলা আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক। তিনি ৭ বার মৌলভীবাজার-৪ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি ২০০৯ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ, ২০০১ সাল থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত সংসদে বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ, এবং ১৯৯৬ সাল থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত জাতীয় সংসদে হুইপ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এ ছাড়াও তিনি একাদশ জাতীয় সংসদে অনুমিত হিসাব সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি হিসেবে পালন করেছেন।দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ের পর তাকে কৃষি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়।

ইয়াফেস ওসমান : ইয়াফেস ওসমান ১৯৪৬ সালের ১ মে তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির (বর্তমান বাংলাদেশ) চট্টগ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা কথাসাহিত্যিক শওকত ওসমান এবং মাতা সালেহা ওসমান। তার ভাই বুলবন ওসমান একজন সাহিত্যিক, চিত্রশিল্পী ও শিক্ষায়তনিক ব্যক্তি। তিনি চট্টগ্রাম মুসলিম হাই স্কুল এ পড়াশুনা করেন। পরবর্তীতে তিনি সিদ্ধেশ্বরী বালক উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক এবং নটর ডেম কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন। তিনি বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ব্যাচেলর অফ আর্কিটেকচার ডিগ্রি লাভ করেন।তিনি ১৯৭০ সালে প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের সহ-সভাপতি নির্বাচিত হন। বুয়েটের ছাত্র ইউনিয়নের নেতা হিসেবে ইউকসুর ভিপি নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি। ছাত্র জীবনে তিনি বাম ধারার রাজনীতিক ছিলেন। পরে তিনি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক হিসেবে আওয়ামী লীগে যোগদান করেন। ইয়াফেস ওসমান একজন মুক্তিযোদ্ধা। তিনি কর্মজীবন শুরু করেন ফজলুর রহমান খানের অধীনে জুনিয়র স্থপতি হিসেবে। পরে তিনি বাংলাদেশ সরকারের আবাসন বিভাগের স্থপতি হিসেবে ১৯৭২ সালের মে থেকে ১৯৭৪ সালের এপ্রিল পর্যন্ত কর্মরত ছিলেন। তিনি বাংলাদেশ স্থপতি ইনস্টিটিউটের প্রতিষ্ঠাকালীন সাধারণ সম্পাদক। তার কর্মজীবনে তিনি স্থাপনা ও প্রকৌশল বিষয়ক কনসালট্যান্সি ফার্ম প্রকল্প উপদেষ্টা লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছিলেন।ইয়াফেস ওসমান ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি বাংলাদেশ সরকারের তৎকালীন বিজ্ঞান এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে শপথগ্রহণ করেন। ২০১৪ সালের ১২ জানুয়ারি তিনি দ্বিতীয়বারের মত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন।২০১৫ সালের ১৪ জুলাই তিনি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে শপথগ্রহণ করেন। তিনি ২০১৯ সালের ৭ই জানুয়ারি টানা ৩য় মেয়াদে পুনরায় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী নিযুক্ত হন।দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ের পর তাকে পূনরায় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়।

সামন্ত লাল সেন: সামন্ত লাল সেন ১৯৪৯ সালের ২৪ নভেম্বর তৎকালীন পূর্ববঙ্গের সিলেটের হবিগঞ্জের নাগুরা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।তার পিতার নাম জিতেন্দ্র লাল সেন যিনি সরকারি চাকরি করতেন। তিনি সেন্ট ফিলিস হাইস্কুল থেকে ১৯৬৪ সালে মাধ্যমিক সম্পন্ন করে সুরেন্দ্রনাথ কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক সম্পন্ন করেন। ১৯৭৩ সালে তিনি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করেন। ১৯৮০ সালে অস্ট্রিয়ার ভিয়েনা থেকে ‘ডিপ্লোমা ইন স্পেশালাইজড সার্জারি’ ডিগ্রি অর্জন করেন। পরবর্তীতে জার্মানি ও ইংল্যান্ডে সার্জারিতে আরো প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন।তিনি এমবিবিএস পাস করার পর ১৯৭৫ সালে হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে তার কর্মজীবন শুরু করেন।পরে ঢাকায় বদলি হয়ে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যোগ দেন। ১৯৮০ সালে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যোগদান করেন।ডা. মোহাম্মদ শহীদুল্লাহর নেতৃত্বে ঢাকা মেডিকেলে ১৯৮৬ সালে বাংলাদেশের প্রথম বার্ন বিভাগ চালু হয়।তিনি এই বিভাগ চালু করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। পরে ২০০৩ সালে বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারির জন্য সতন্ত্র একটি ইউনিট প্রতিষ্ঠা করা হয়।তিনি এ ইউনিটের প্রতিষ্ঠাকালীন পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে অবসরে যান।পরে সরকার তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের প্রধান সমন্বয়ক হিসেবে নিয়োগ প্রদান করে।পরবর্তীতে এই ইউনিটটিকে একটি স্বতন্ত্র ইন্সটিটিউটে রুপান্তর করে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট নামে ২০১৯ সালের ৪ জুলাই এখান থেকে চিকিৎসা সেবা প্রদান শুরু হয়। শুরু থেকেই সামন্ত এর প্রধান সমন্বয়কের দায়িত্ব পান। চিকিৎসাসেবায় বিশেষ অবদানের জন্য বাংলা একাডেমি তাকে ২০১৮ সালে সম্মানসূচক ফেলোশিপ প্রদান করে। তিনি বাংলাদেশ প্লাস্টিক সার্জন সোসাইটির সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন।দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ের পর তাকে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়।

মো. জিল্লুল হাকিম: বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. জিল্লুল হাকিম ১৯৫৪ সালের ২ জানুয়ারি রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি উপজেলার আনন্দবাজার গ্রামে এক মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম মো. আবুল হোসেন। তিনি ছিলেন একজন সমাজসেবক এবং শিক্ষানুরাগী। জিল্লুল হাকিমের পৈতৃক বাড়ি পাংশা উপজেলার নারায়ণপুর গ্রামে।তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর (এমএ) পাশ করেছেন।১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় জিল্লুল হাকিম যুদ্ধকালীন কমান্ডার ছিলেন। জিল্লুল হাকিম ছাত্র জীবন থেকেই রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। মোট ৬ বার জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে তিনি ৫ বার রাজবাড়ী-২ (পাংশা, বালিয়াকান্দি ও কালুখালী) থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯৬ সালের প্রথম নির্বাচনে তিনি জাতীয় পার্টির প্রার্থীকে পরাজিত করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। পরেরবার ২০০১ সালের নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থী নাসিরুল হক সাবুর কাছে হেরে যান তিনি। পরে ২০০৮ সালের নির্বাচনে বিএনপির নাসিরুল হক সাবুকে পরাজিত করে তিনি ফের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।এ ছাড়া ২০১৪ ও ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। সর্বশেষ তিনি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে বিপুল ভোটে নির্বাচিত হন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ের পর তাকে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়।

ফরহাদ হোসেন: ফরহাদ হোসেন মেহেরপুর জেলার মেহেরপুর সদর উপজেলার বোস পাড়া এলাকায় ৫ জুন ১৯৭২ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহচর, মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের অন্যতম প্রধান সংগঠক ছহিউদ্দীন বিশ্বাস। তিনি (মোহাম্মদ সহিউদ্দিন) তৎকালীন কুষ্টিয়া-৫ ও মেহেরপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন। ফরহাদ হোসেন  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি ভাষাতত্ত্বে এম. এ. ডিগ্রি লাভ করেন । তিনি ঢাকা সিটি কলেজের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক হিসাবে কর্মরত ছিলেন । তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, মেহেরপুর জেলা শাখার সভাপতি ।তিনি দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদে সংসদীয় আসন ৭৩ মেহেরপুর-১ (মেহেরপুর-মুজিবনগর)-এর সংসদ-সদস্য নির্বাচিত হন।তিনি দশম জাতীয় সংসদের অর্থ মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ও অর্থ মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির মুদ্রাপাচার-সংক্রান্ত উপকমিটির সদস্য এবং মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের নির্বাহী সদস্য ছিলেন। তিনি জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। সর্বশেষ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি ৩য় বারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ের পর তাকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়।

নাজমুল হাসান: নাজমুল হাসান ৩১ মে, ১৯৬১ সালে কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরব নদীবন্দরের উত্তর ভৈরবপুর এলাকায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি বাংলাদেশের প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান এবং একজন সমাজকর্মী ও রাজনীতিবিদ আইভি রহমানের সন্তান। তিনি ১৯৮৫ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউট থেকে মার্কেটিংয়ে এমবিএ ডিগ্রী অর্জন করেন।বাংলাদেশের ১৯তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে জিল্লুর রহমানের শপথ গ্রহণের ফলে কিশোরগঞ্জ-৬ আসন শূন্য হয়। শূন্য আসনে ক্ষমতাসীন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে ২০০৯ সালের উপ-নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে প্রথম মেয়াদে সংসদ সদস্য হন তিনি।বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি হিসেবে ২০১২ সাল থেকে তিনি দায়িত্ব পালন করছেন।তিনি দেশের বৃহত্তম ঔষধ প্রস্তুতকারী সংস্থা বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। আবাহনী লিমিটেডের ক্রিকেট কমিটির প্রেসিডেন্ট।সর্বশেষ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি ৪র্থ বারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ের পর তাকে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়।

সাবের হোসেন চৌধুরী: সাবের হোসেন চৌধুরীর জন্ম ১০ সেপ্টেম্বর ১৯৬১ সালে। তার পিতৃ-ভিটা ফেনী জেলার দাগনভূঞা উপজেলায়।তিনি ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি ছিলেন তিনি। তার সময়কালীন ২০০০ সালের জুন মাসে বাংলাদেশ আইসিসি’র পূর্ণ সদস্য পদ এবং টেস্ট স্ট্যাটাস পায়। বাংলাদেশের ক্রিকেটের উন্নয়ন এবং বিশ্ব ক্রিকেটে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০০২ সালের অক্টোবর মাসে লন্ডনে মেরিলেবোন ক্রিকেট ক্লাব তাঁকে আজীবন সদস্যপদ প্রদান করে।তিনি ১৯৯৬ সালে ঢাকা-৬ নির্বাচনী আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।তিনি নৌপরিবহন উপমন্ত্রী হিসেবে ৩১ ডিসেম্বর ১৯৯৭ থেকে ২৪ ডিসেম্বর ১৯৯৮ পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন।২৪ ডিসেম্বর ১৯৯৮ থেকে ১৫ জুলাই ২০০১ পর্যন্ত তিনি স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক সচিব ছিলেন। ২০০১ সালের ডিসেম্বর মাসে তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যকরী সংসদের সাংগঠনিক সম্পাদক মনোনীত হন। নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আসন পুনর্বণ্টনের ফলে তার নির্বাচনী এলাকাটি হয় ঢাকা-৯ আসন। ওই নির্বাচনে তিনি বিএনপির শিরিন সুলতানাকে হারিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। দশম জাতীয় নির্বাচনে তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। একাদশ সংসদ নির্বাচনে তিনি একই আসন থেকে পুনঃরায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।সর্বশেষ তিনি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে বিপুল ভোটে নির্বাচিত হন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ের পর তাকে  পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়।

মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল : মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল ১৯৮৩ সালের ২৬ জুন চট্টগ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ৩য় মেয়র এবিএম মহিউদ্দীন চৌধুরী ও মাতা শাহেদা মহিউদ্দিন। তিনি লন্ডন স্কুল অব ইকনোমিক্স থেকে স্নাতক পাশ করে লন্ডন থেকে ব্যারিস্টারি সম্পূর্ণ করেন।নওফেল ঢাকা বারের আইনজীবী। তিনি চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিরও সদস্য। বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল বিজয় টিভির তিনি ব্যবস্থাপনা পরিচালক। ২০১৬ সালে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সম্মেলনে তিনি সর্বকনিষ্ঠ সাংগঠনিক সম্পাদক মনোনীত হন। তিনি কেন্দ্রীয় যুবলীগের সদস্য ও চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য ছিলেন।তিনি ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-৯ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং ৭ জানুয়ারি ২০১৯ সালে তিনি বাংলাদেশের শিক্ষা উপমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন।সর্বশেষ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি আবারও সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্ব পান।

প্রতিমন্ত্রীদের পরিচয়:

নসরুল হামিদ: নসরুল হামিদ (বিপু) ১৩ নভেম্বর ১৯৬৪ সালে জন্মগ্রহণ করেন।তিনি  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করেছেন।নসরুল হামিদ তরুণ বয়স থেকেই রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন।  তিনি ১৯৯৪ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত কেরানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্পাদক ছিলেন। ১৯৯৭ সালে তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের সহকারী সেক্রেটারী নির্বাচিত হন এবং ১২ বছর এই দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ২০০১ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ছিলেন। ঢাকা-৩ আসন থেকে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে তিনি প্রথমবারের মত সংসদ সদদ্য হন। ২০১৪ এবং ২০১৮ সালে তিনি দ্বিতীয় এবং তৃতীয়বারের মত নির্বাচিত হন এবং ২০১৪ সাল থেকে টানা দুইবার বিদ্যুৎ, জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি নসরুল হামিদ একজন সফল ব্যবসায়ী, সংগঠক। তিনি হামিদ গ্রুপের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্বরত আছেন। তিনি আওয়ামী লীগের গবেষণা শাখা সিআরআই (সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন) এর একজন ট্রাস্টি।দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ের পর তাকে বিদ্যুৎ বিভাগের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়।

খালিদ মাহমুদ চৌধুরী:খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ১৯৭০ সালে ৩১শে জানুয়ারি দিনাজপুর জেলার বোচাগঞ্জ উপজেলার ধনতলা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, বঙ্গবন্ধুর স্নেহধন্য, সাবেক প্রতিমন্ত্রী আব্দুর রৌফ চৌধুরী, মাতা রমিজা বেগম। তিনি ১৯৮৪ সালে সেতাবগঞ্জ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়, দিনাজপুর হতে এস.এস.সি, ১৯৮৬ সালে দিনাজপুর সরকারি কলেজ হতে এইচ.এস.সি পাশ করেন। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ১৯৮৯ সালে বি.কম পাশ করার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এর অধীনে ১৯৯২ সালে মাস্টার্স ডিগ্রি সম্পন্ন করেন। তিনি ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজ (NDC) এর অধীনে ক্যাপস্টোন কোর্স সম্পন্ন করেন। ছাত্রজীবন থেকেই তিনি ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত ছিলেন। তিনি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের দপ্তর সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে ২০০২ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের জাতীয় কাউন্সিলে উপ-কমিটির সহ-সম্পাদক নির্বাচিত হন এবং ২০০৭ সালের ১২ জানুয়ারী আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর বিশেষ সহকারীর দায়িত্ব লাভ করেন। তিনি প্রথমবারের মতো ২০০৮ সালে দিনাজপুর-২ আসন থেকে আওয়ামীগের মনোনয়ন নিয়ে সংসদ সদস্য হন। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগের ১৮তম জাতীয় কাউন্সিলে সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত হন এবং ২০১২ সালে জাতীয় কাউন্সিলে দ্বিতীয়বারের মত সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত হয়ে তিনি দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারী ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দ্বিতীয়বার একই আসন হতে তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০১৬ সালে ২২ অক্টোবর আওয়ামী লীগের ২০তম জাতীয় কাউন্সিলে তৃতীয়বার সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত হয়ে দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একাদশ  জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তৃতীয়বার দিনাজপুর-২ (বিরল-বোচাগঞ্জ উপজেলা) আসন হতে তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।তিনি বাংলাদেশ সরকারের নৌ-পরিবহণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন।সর্বশেষ তিনি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে  আবারও সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ের পর তাকে  নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়।

জুনাইদ আহ্‌মেদ‍ পলক:  জুনাইদ আহ্‌মেদ‍ পলক ১৯৮০ সালের ১৭ মে বাংলাদেশের নাটোর জেলার সিংড়া উপজেলার সেরকোল তেলিগ্রাম এ জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম ফয়েজ উদ্দিন এবং মায়ের নাম জামিলা আহমেদ। তিনি ১৯৯৫ সালে সিংড়া দমদমা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও ১৯৯৭ সালে রাজশাহী ওল্ড ডিগ্রি কলেজ (বর্তমানে রাজশাহী কলেজ নামে পরিচিত) থেকে এইচএসসি পাশ করেন। পরবর্তীতে ঢাকা কলেজ হতে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে এল.এল.বি ডিগ্রি অর্জন করে বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টে আইন পেশায় নিয়োজিত হন। বাবা মরহুম ফয়েজ উদ্দিনের পদানুসরণ করে জুনাইদ আহ্‌মেদ‍ পলক বিশ বছর বয়সে আওয়ামী লীগের একজন সদস্য হিসেবে রাজনীতিতে যোগ দেন। ২৮ বছর বয়সে ২০০৮ সালে সিংড়া নির্বাচনী এলাকা থেকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে নির্বাচিত হন।২০১৪ এবং ২০১৮ সালে তিনি দ্বিতীয় এবং তৃতীয়বারের মত নির্বাচিত হন।তিনি তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।সর্বশেষ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি আবারও সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ের পর তাকে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়।

জাহিদ ফারুক্: জাহিদ ফারুক শামীমের জন্ম ২৬ নভেম্বর ১৯৫০ সালে বরিশালের নবগ্রাম রোডে। বরিশাল জিলা স্কুলের ছাত্র ছিলেন তিনি। পাকিস্তানের পেশোয়ার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করেন। তার পিতা খন্দকার মজিবুর রহমান ছিলেন সরকারি চাকরিজীবী। মা আম্বিয়া বেগম ছিলেন গৃহিণী।তিনি ছাত্রজীবনেই তৎকালীন পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। বাংলাদেশ স্বাধীন হলে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে কাজ করেন। ২০০৪ সালে তিনি কর্নেল পদে দায়িত্ব পালন করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী থেকে অবসর গ্রহণ করেন।তিনি ২০০৪ সালে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। বর্তমানে তিনি বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি।বরিশাল-৫ আসন থেকে ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি প্রথম বারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন ।পরবর্তীতে তিনি পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সর্বশেষ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি আবারও সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ের পর তাকে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়।

সিমিন হোসেন রিমি: সিমিন হোসেন রিমি ১৯৬১ সালের ১৯ আগস্ট তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের ঢাকা জেলার গাজীপুরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ এবং আওয়ামী লীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সৈয়দা জোহরা তাজউদ্দীনের সন্তান। তার স্বামীর নাম মুশতাক হোসেন। তিনি সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তানজিম আহমেদ সোহেল তাজের বড় বোন।২০১২ সালের সেপ্টেম্বরে গাজীপুর-৪ আসনের উপনির্বাচনে সিমিন হোসেন রিমি প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন। এর পর ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে আবারও এই আসন থেকে ২য় বারের মতো এমপি নির্বাচিত হন। ২০২২ সালের নভেম্বরে রিমিকে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। তিনি সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ছিলেন।সর্বশেষ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি আবারও সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ের পর তাকে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়।

কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা: কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরার জন্ম ১৯৬৩ সালের ৪ নভেম্বর খাগড়াছড়ি জেলায়। তিনি বি.এ. ডিগ্রি লাভ করেছেন। তিনি ত্রিপুরী সম্প্রদায়ের যা বাংলাদেশের ‘ত্রিপুরা’ নামে পরিচিত। কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসাবে ২০১৪ সালে খাগড়াছড়ি জেলা থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। ৮ই ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ইং তাকে প্রত্যাবাসন শরণার্থী এবং অভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুত ব্যক্তিদের পুনর্বাসনের বিষয়ে টাস্কফোর্সের চেয়ারম্যান করা হয়। এই চেয়ারম্যান পদটি প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদা সম্পন্ন । এর আগে তিনি খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের “চেয়ারম্যান” হিসাবে ২০১০ থেকে ২০১৩ পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেছিলেন।সর্বশেষ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি আবারও সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ের পর তাকে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়।

মহিব্বুর রহমান: মহিব্বুর রহমান মুহিব পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম আলহাজ্ব জালাল উদ্দিন।তিনি পটুয়াখালীর কলাপাড়ার ধুলাসারের আলহাজ্ব জালাল উদ্দিন ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ ছিলেন। কলাপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সমাজ কল্যাণ সম্পাদক ও বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দীয় কমিটির সদস্য হিসেবে তিনি দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি পটুয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি। তিনি ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে পটুয়াখালী-৪ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।সর্বশেষ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি আবারও সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ের পর তাকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়

মোহাম্মদ আলী আরাফাত : মোহাম্মদ আলী আরাফাত এর জন্ম রাজশাহীতে। তিনি মোহাম্মদ এ আরাফাত নামে পরিচিত।তিনি একজন শিক্ষাবিদ ও রাজনীতিবিদ। মোহাম্মদ এ আরাফাত কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ এর কৌশলগত ব্যবস্থাপনা ও নীতি বিভাগের অধ্যাপক ও সুচিন্তা ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান।তিনি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও চ্যালেঞ্জ, ট্রানজিট ও যোগাযোগ, বিদ্যুৎ খাতের জন্য উপযুক্ত নীতি, যুদ্ধাপরাধের বিচার, রাজনৈতিক উন্নয়ন এবং বাংলাদেশে গণতন্ত্র ইত্যাদি বিষয়ের উপর লেখালেখি করেন। ২০২২ সালের ডিসেম্বরে আরাফাত আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য হন। তিনি জুলাই ২০২৩ সালে ঢাকা-১৭ আসনের উপ-নির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ৭ জানুয়ারি ২০২৪ সালে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-১৭ আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হযেছেন।দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ের পর তাকে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়।

শফিকুর রহমান: শফিকুর রহমান চৌধুরী ১৮ আগস্ট ১৯৫৭ সালে সিলেট জেলার বিশ্বনাথের দশঘর ইউনিয়নের চান্দভরাং গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম আব্দুল মতলিব চৌধূরী ও মাতার নাম  লতিফুন নেসা চৌধূরী। তিনি ১৯৭২ সালে চান্দভরাং উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি, ১৯৭৫ সালে সিলেট এমসি কলেজ থেকে এইচএসসি ও ১৯৭৯ সালে বিএ ডিগ্রী লাভ করেন। তিনি  ১৯৬৯ সালে ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত হন। ১৯৭৮ সালে যুক্তরাজ্যে যাওয়ার পর তিনি আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত হন এবং যুক্তরাজ্য আওয়ামীলীগের বিভিন্ন  গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন।তিনি ছিলেন টাওয়ার হ্যামলেটস কমিউনিটি ডেভোলাপমেন্ট ট্রাস্টের সেক্রেটারী ,বেথনাল গ্রীন সিটি চ্যালেঞ্চের ডিরেক্টর ও বিভিন্ন সাব কমিটির কো-চেয়ারম্যান, বিশ্বনাথ প্রবাসী এডুকেশন ট্রাস্টের সভাপতি, প্রবাসী ভোটাধিকার বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য সচিব, লন্ডনে বৈশাখী মেলা বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য ও অন্যতম উদ্যোক্তা, বাংলা টাউন বাস্তবায়নের অন্যতম উদ্যোক্তা এবং লন্ডন বাংলাদেশ সেন্টারের এডহক কমিটির সদস্য ।যুক্তরাজ্য আওয়ামীলীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক থেকে শফিকুর রহমান চৌধুরী সরাসরি সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হন। তিনি নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিলেট-২ আসন থেকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের হয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।সর্বশেষ তিনি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে  সিলেট-২ আসন থেকে  সংসদ সদস্য নির্বাচিত হযেছেন।দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ের পর তাকে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়।

রুমানা আলী : রুমানা আলী টুসী হলেন সাবেক মন্ত্রী,গাজীপুর -৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য রহমত আলীর কন্যা। তিনি রাজধানী ঢাকার নিউমডেল বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের ইংরেজি সাহিত্যের শিক্ষিকা।তিনি একাদশ জাতীয় সংসদে ১৪ নং সংরক্ষিত মহিলা আসনে সংসদ সদস্য হিসেবে ছিলেন।সর্বশেষ তিনি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে  গাজীপুর ৩ আসন থেকে  সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ের পর তাকে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়।

আহসানুল ইসলাম টিটু: আহসানুল ইসলাম টিটু ১৯৬৯ সালে টাঙ্গাইল জেলার নাগরপুর উপজেলার নয়াপারা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম মকবুল হোসেন ও মাতার নাম গোলাম ফাতেমা তাহেরা খানম। তিনি ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল থেকে মাধ্যমিক ও ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক সম্পন্ন করে ব্যাংককের অ্যাজাম্পসন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিবিএ ও যুক্তরাষ্ট্রের পিটসবার্গ স্টেট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ ডিগ্রি অর্জন করেন।তিনি শিক্ষাজীবন শেষ করে ব্যবসাতে যুক্ত হন। ১৯৯৩ সালে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সদস্যপদ পান। ১৯৯৫ সালে তিনি মনা ফিন্যান্সিয়াল কনসালটেন্সি এন্ড সিকিউরিটিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এছাড়াও তিনি সন্ধানী লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি ২০১৩ সালের ১৫ জুন তিনি ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সভাপতি নির্বাচিত হন এবং ২০১৪ পর্যন্ত এ দায়িত্ব পালন করেন।এছাড়াও তিনি বাংলাদেশ বীমা সমিতির সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।টিটু বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের টাঙ্গাইল জেলা শাখার শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।তিনি টাঙ্গাইল-৬ আসন থেকে ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। সর্বশেষ তিনি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে  আবারও সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ের পর তাকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়।