প্রধানমন্ত্রী শেখ হসিনা বলেছেন, বাংলাদেশকে এখন আর কেউ দুর্ভিক্ষের দেশ, ভিক্ষুকের দেশ মনে করে না। এখন সবাই মনে করে বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল।
সোমবার (১৫ জানুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের এক যৌথসভায় তিনি এ কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘৭৫ সালের পর থেকে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি আন্তর্জাতিকভাবে এমন অবস্থায় ছিল, তখন বাংলাদেশ বললে মানুষ মনে করত একটা দুর্ভিক্ষের দেশ, দুর্যোগের দেশ; এদেশের কোনো ভবিষ্যৎ নেই। জাতির পিতাকে হত্যার পর অনেক দেশ বলেছে, তোমরা তোমাদের নেতাকে হত্যা করেছ? তখন খুনি দেশ হিসেবে আমরা পরিচিত হই। সে সময় আন্তর্জাতিকভাবে কোথাও গেলে বলত বাংলাদেশ তো হাত-পাততে আসে। এখন অন্তত এটুকু দাবি করতে পারি, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকে বাংলাদেশের ভাবমূর্তিটা পরিবর্তন হয়েছে।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, বিএনপির আমলে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের এই অফিসে ঢুকতে দিত না, চারদিকে পুলিশি ব্যারিকেড দেওয়া ছিল। অনেক সময় নেতাকর্মীরা আটকা পড়ত, তখন আমি বাধ্য হয়ে জোর করে ঢুকতাম এবং নেতাকর্মীদের উদ্ধার করতাম। ২০০১ এ নির্বাচনের পর আমাদের অফিসটা হয়ে গিয়েছিল হাসপাতাল। কারণ, বিভিন্ন জেলা থেকে আহত নেতাকর্মীরা এখানে আশ্রয় নিয়েছিল। নেতাকর্মীদের চিকিৎসা ব্যবস্থা, খাওয়ার ব্যবস্থা আমরা এখানে করেছিলাম।
তিনি বলেন, ‘৭৫ সালে জাতির পিতাকে হত্যার পর আমাদের ইতিহাসকে বিকৃত করা হয়েছে। স্বাধীনতাকে বিকৃত করা হয়েছে। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধ্বংস করা হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, নির্বাচন যাতে না হয়, অনেক চক্রান্ত ছিল, অনেক ষড়যন্ত্র ছিল। সেই ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করেই আমরা নির্বাচন করেছি।
নেতাকর্মীদের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, যারা নির্বাচন করেছে, কেউ জয়ী হয়েছে, কেউ জয়ী হতে পারেনি। সেক্ষেত্রে একজন আরেকজনকে দোষারোপ করা বা কার কি অপরাধ এগুলো খুঁজে বের করা, এসব বন্ধ করতে হবে। আমাদের দল ছাড়া কয়েকটি দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছে, আমরা জনগণের যে সমর্থন পেয়েছি সেটা কিন্তু কাজের স্বীকৃতি। দেশে মানুষের জন্য আমরা কাজ করেছি, দেশের মানুষ আমাদেরকে ভোট দিয়েছে, আমাদের জয়ী করেছে। সেখানে হয়ত কেউ জিততে পেরেছে, কেউ জিততে পারেনি। হারজিত যাই হোক সেটা সবাইকে মেনে নিয়ে অন্তত নিজের দেশের কল্যাণের জন্য কাজ করতে হবে। আমরা যদি একে অপরের দোষ ধরতে ব্যস্ত থাকি, এটা আমাদের বিরোধী দলকে আরো উৎফুল্ল করবে, তাদের কিছু সুযোগ দেওয়া হবে।