গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর আগ্রাসনে দীর্ঘ হচ্ছে লাশের সারি। ইসরায়েলি ট্যাঙ্ক এবং সাঁজোয়া যান খান ইউনিসের একটি হাসপাতালকে ঘিরে রেখেছে। ফিলিস্তিন রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি জানিয়েছে, ইসরায়েলি সামরিক অভিযানের কারণে আরও একটি হাসপাতালের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে।
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলি সীমান্তে প্রবেশ করে আকস্মিক হামলা চালায় ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। এরপরেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েল। সেখানে হামাসকে নির্মূলের অজুহাতে প্রতিদিন শত শত ফিলিস্তিনিকে হত্যা করা হয়েছে। বাদ পড়ছে না ছোট ছোট শিশরাও।
হামাস-নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সেখানে ইসরায়েলের হামলায় এখন পর্যন্ত ৩২ হাজার ৪১৪ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এছাড়া আহত হয়েছে আরও ৭৪ হাজার ৭৮৭ জন। এর মধ্যে অধিকাংশই নারী এবং শিশু।
এর আগে দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় জরুরিভিত্তিতে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব পাস হয়। সোমবার (২৫ মার্চ) পাস হওয়া এই প্রস্তাবে গাজায় যুদ্ধবিরতির পাশাপাশি হামাসের হাতে থাকা জিম্মিদের অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তির শর্ত রাখা হয়েছে।
এই প্রস্তাবে ভোটদানে বিরত ছিল ইসরায়েলের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ মিত্র যুক্তরাষ্ট্র। তবে নিরাপত্তা পরিষদের বাকি ১৪টি দেশ প্রস্তাবটির পক্ষে ভোট দেয়। এই প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়ে জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর নিরাপত্তা পরিষদে গাজায় যুদ্ধবিরতি সংক্রান্ত প্রস্তাব পাস হয়েছে। এই প্রস্তাব অবশ্যই বাস্তবায়ন হতে হবে। যদি কোনো পক্ষ এই যুদ্ধবিরতি ও এর শর্তগুলো বাস্তবায়নে ব্যর্থ হয়, তাহলে তা হবে ক্ষমার অযোগ্য অপরাধের শামিল।
গত শুক্রবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে গাজায় যুদ্ধবিরতির খসড়া প্রস্তাব দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু রাশিয়া ও চীনের ভেটোর কারণে প্রস্তাবটি পাস হয়নি। সেদিন মস্কোর অভিযোগ ছিল, ওয়াশিংটনের দ্বিমুখী নীতি ইসরায়েলের ওপর কোনো চাপ তৈরি করছে না।
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে তোলা প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয় ১১ দেশ। বিপক্ষে দেয় তিন দেশ। আর ভোট দেওয়া থেকে বিরত থাকে একটি দেশ।
এদিকে ইরানে সফরকালে হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়েহ বলেছেন, বৈশ্বিক সমর্থন হারাচ্ছে ইসরায়েল। তিনি বলেন, ইসরায়েল ‘অভূতপূর্ব রাজনৈতিক বিচ্ছিন্নতার’ সম্মুখীন হচ্ছে। ইসমাইল হানিয়েহ বলেন, ইসরায়েল এখন রাজনৈতিক আশ্রয় এবং সুরক্ষা হারাচ্ছে। সোমবার নিরাপত্তা পরিষদে আমরা এমন চিত্র দেখতে পেয়েছি।