ইউক্রেনের অভ্যন্তরীণ সমরাস্ত্র উৎপাদন বাধাগ্রস্ত করতে দেশটির বিদ্যুৎ ও গ্যাস অবকাঠামোগুলোতে বড় ধরনের হামলা চালিয়েছে রুশ বিমান বাহিনী। হামলায় দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র এবং বিস্ফোরকভর্তি ড্রোন ব্যবহার করা হয়েছে বলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।
‘দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র-ড্রোন ব্যবহারের মাধ্যমে ইউক্রেনের বিদ্যুৎ ও গ্যাস খাতের বেশ কিছু স্থাপনা ধ্বংস করেছে রুশ বিমান বাহিনী। আঘাতকৃত স্থাপনাগুলো ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে ছিল এবং এসব স্থাপনায় অস্ত্র, গোলাবারুদ ও সামরিক সরঞ্চাম প্রস্তুত ও মেরামত করা হতো। যে লক্ষ্যে হামলা চালানো হয়েছিল, তা সম্পূর্ণ সফল হয়েছে। টার্গেট করা প্রতিটি স্থাপনায় আঘাত হানা হয়েছে,’ রোববারের বিবৃতিতে বলেছে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।
এদিকে রোববার যেদিন রুশ বাহিনী এই হামলা চালালো, সেদিনই ইউক্রেনকে কয়েক শ’ পুরোনো সাঁজোয়া যান এবং বেশ কিছু নতুন সারফেস টু এয়ার ক্ষেপণাস্ত্র প্রদান করা হবে বলে জানিয়েছেন ফ্রান্সের প্রতিরক্ষামন্ত্রী সেবাস্টিয়ান লেকোর্নু।
রোববার ফ্রান্সের দৈনিক লা ট্রিবিউন দিমানশেকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে লেকোর্নু বলেন, ‘সম্প্রতি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর সঙ্গে বৈঠক হয়েছে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির। বৈঠকে প্রেসিডেন্ট ফ্রান্সের কাছে সামরিক সহায়তার অনুরোধ জানান। সেই অনুরোধের জবাবে আমাদের প্রেসিডেন্ট ইউক্রেনীয় বাহিনীকে কয়েকশ’ ভেহিকুলে দ্য ল’ভান্ত ব্লাইন্ডে (ভিএবি) সাঁজোয়া যান এবং সারফেস টু এয়ার ক্ষেপণাস্ত্র দিতে রাজি হয়েছেন। ভিএবি সাঁজোয়া যানগুলো পুরোনো হলেও এখনও সচল এবং কার্যকর।’
‘যুদ্ধের বর্তমান যে গতিপ্রকৃতি, তাতে এটা স্পষ্ট যে ইউক্রেনীয় বাহিনীকে আরও অনেক দিন লড়াই চালিয়ে যেতে হবে। যে সহায়তা তাদের প্রদান করা হচ্ছে, তা তারা কাজে লাগাতে পারবেন বলে ফ্রান্স আশা করছে।’
২০১৫ সালে স্বাক্ষরিত মিনস্ক চুক্তির প্রধান শর্ত অনুযায়ী কৃষ্ণ সাগরের উপদ্বীপ ক্রিমিয়াকে রুশ ভূখণ্ড হিসেবে স্বীকৃতি দিতে কিয়েভ প্রতিশ্রুতি দিলেও পরে তা না মানা এবং যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন সামারিক জোট ন্যাটোর সদস্যপদের জন্য কিয়েভের তদ্বিরের জেরে কয়েক বছর টানাপোড়েন চলার পর ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ইউক্রেনে সামারিক অভিযান শুরু করে রুশ বাহিনী। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এই অভিযানের নির্দেশ দিয়েছিলেন।
গত দুই বছর ধরে চলমান এই অভিযানে ইতোমধ্যে নিহত হয়েছেন হাজার হাজার রুশ এবং ইউক্রেনীয় সেনা।
সূত্র : রয়টার্স