
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের বলেছেন, জাতি আজ চরম সংকটময় সময় পার করছে। দিন যতই যাচ্ছে সংকটের গভীরতা ততই বাড়ছে। আগে আমরা যেটাকে সংকট বলেছি, এখন মনে হচ্ছে সেটা কোনও সংকটই ছিল না। দেশের বেশির ভাগ মানুষ আয় দিয়ে সংসার চালাতে পারছে না। জিনিসপত্রের দাম প্রতিদিনই বাড়ছে।
শনিবার (১১ মে) দুপুরে বনানীর জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের কার্যালয় মিলনায়তনে পার্টির ঢাকা মহানগর উত্তরের মতবিনিময় সভায় জিএম কাদের এসব কথা বলেন।
টাকার অবমূল্যায়নে ডলারের দাম বেড়ে গেছে, মূল্যস্ফীতি হচ্ছে বলে অভিযোগ করে জিএম কাদের বলেন, ডলার সংকটের কারণে সরকার আমদানি সংকোচন করেছে। এতে অনেক কলকারখানা বন্ধ হয়ে মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছে। সার্বিকভাবে অর্থনৈতিক মন্দা সৃষ্টি হয়েছে।
এমন বাস্তবতায় একটি শ্রেণি ইউরোপের স্টাইলে জীবনযাপন করছে বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে বিশাল অর্থ সম্পদের মালিক হয়েছে তারা। বিশ্ব সংস্থাগুলোর জরিপে দেশে ধনী ও দরিদ্রের বৈষম্য বাড়ছে। একটি শ্রেণি আধাপেট খেয়ে বেঁচে আছে। অনেকে অর্থের অভাবে চিকিৎসা করতে পারছে না। এ বৈষম্যের জন্য মানুষের মধ্যে হতাশা বাড়ছে।
বর্তমান সরকার সিন্দাবাদের দৈত্য হয়ে জনগণের কাঁধে চেপে বসেছে বলে মন্তব্য করে জিএম কাদের বলেন, জনগণের কথায় সে চলে না, তার কথায় জনগণকে চলতে বাধ্য করছে। স্বাধীনতা ও মুক্তির জন্য দেশের মানুষ জীবন দিয়েছেন। পাকিস্তানিদের শোষণ ও বৈষম্য থেকে মুক্তি পেতেই আমরা একটি দেশ চেয়েছিলাম। স্বাধীনতার যুদ্ধ শুরু হয়েছিলো ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে, আর মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়েছিলো হাজার বছর আগে।
তিনি আরও বলেন, চাকরি, ব্যবসা থেকে শুরু করে সব কিছুতেই প্রথম প্রশ্ন আপনি সরকারি দলের সদস্য কিনা। দ্বিতীয় প্রশ্ন আপনার পরিবারের কেউ সরকারি দলের বাইরে অন্য কোনও দল করে কিনা। যে রাষ্ট্রের জন্য মানুষ জীবন দিলো সে রাষ্ট্র আজ চলে গেছে একটি গোষ্ঠীর হাতে। যারা আওয়ামী লীগের বাইরে তারা অবাঞ্ছিত। অবস্থা এমন যে.. থাকলে দাস হিসেবে থাকেন, না থাকলে যান। কথা বলার অধিকার নেই কারো।
গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেন, বিদ্যুতের চাহিদা ১৩ থেকে ১৬ হাজার মেগাওয়াট। হঠাৎ করে গত বছর ১৭ হাজার হয়ে গিয়েছিলো। তখন ক্যাপাসিটি চার্জ দেওয়া ১০ হাজার মেগাওয়াটের বিদ্যুৎ প্লান্ট বসিয়ে রাখা হয়েছিলো। ১ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ নেওয়া হয়নি। অথচ ২৭ হাজার মেগাওয়াট উৎপাদনের জন্য ক্যাপাসিটি চার্জ দেওয়া হয়েছে।
ঢাকা মহানগর উত্তরের যুগ্ম আহ্বায়ক সামছুল হক সামছুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভা পরিচালনা করেন মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব সুলতান আহমেদ সেলিম।