বনানী স্টার কাবাবে কাচ্চি বিরিয়ানির সাথে পঁচা ও গন্ধযুক্ত টিক্কা দেওয়ায় প্রতিবাদ করায় গ্রাহকে ব্যাপক মারধর করার ঘটনায় ১১ জনকে আটক করছে পুলিশ।
রবিবার রাতে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করে থানায় নিয়ে আসে পুলিশ।এ ঘটনায় ১১ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ৫/৬ জনকে আসামী করে বনানী থানায় মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগী কৃষিবিদ সালেহ মোহাম্মদ রশিদ অলক।
আটককৃতরা হলেন, স্টার কাবাব বনানী শাখার ম্যসনোজার মো. মুসলিম (৪০), কাজী মোঃ সাগর (২২),মোঃ রাসেল (২২), মোঃ মোখলেছুর রহমান (২৭), মোঃ হৃদয় সরদার (২৫), অপু সর্দার (২৪),মোঃ হানিফ (৩২), মোঃ জামাল হোসেন (২২), মোঃ মোহন (২৩), দেলোয়ার হোসেন (৩৫),মোঃ মিরাজ হাওলাদার (২০)।
মামলার এজহারে বলা হয়, দুপুরে ভুক্তভোগী এবং তার এক বন্ধু বনানী স্টার কাবাবে খেতে গিয়েছিলেন। এ সময় তাদেরকে কাচ্চির সাথে পচা ও গন্ধযুক্ত টিক্কা দেওয়া হয়। পরে তিনি বিষয়টি হোটেল কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। তার বন্ধু খাবারে গন্ধ হওয়ার অভিযোগ করলে স্টার কাবাবের ম্যানেজার তাকে বলেন, ‘জীবনে টিক্কা খাননি আপনি। এটা এমনই হয়।’
একপর্যায়ে তিনি বিষয়টি নিয়ে প্রতিবাদ করলে, আশপাশের আরও তিনজন গ্রাহকও একই অভিযোগ করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে কলিংবেল চেপে সব স্টাফকে জড়ো করেন ম্যানেজার। এ সময় ১৪/১৫ স্টাফ এসে আমাকে ধাক্কা ধাক্কি করে টেবিলে পাঠানোর চেষ্টা করে এবং দুর্গন্ধযুক্ত খাবার খাওয়ার জন্য বলে। আমি উক্ত দুর্গন্ধযুক্ত খাবার খেতে রাজি না হওয়ায় এবং পরিবর্তন করে দিতে বললে তারা আমাকে ঘিরে ধরে এবং বিভিন্ন ধরণের হুমকি দিতে থাকে। তখন আমি তাদের ভয়ে দৌড় দিলে ম্যানেজারের নির্দেশে স্টাফরা
আমাকে ধাওয়া করে এবং নীচতলায় গিয়ে আমাকে এলোপাথাড়ি কিলঘুসি মারতে থাকে। একপর্যায়ে তারা আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে আমার গলা চেপে শ্বাসরুদ্ধ করে। তখন আমি তাদের হাত রক্ষার জন্য পালিয়ে যেতে চাইলে তারা আমাকে পিছন থেকে স্বজোরে আমার পিঠে লাথি মারলে আমি রাস্তায় পড়ে যাই এবং আমার কপালের ডান পাশে গুরুতর রক্তাক্ত জখমপ্রাপ্ত হই। এ সময়ে স্টাফরা আমাকে এলোপাথাড়ি লাথি মারতে থাকে এতে আমার শরীরের বিভিন্ন স্থানে নীলাফোলা জখমপ্রাপ্ত হয়ে ডাক চিৎকার করতে থাকি। তখন এ রেস্টুরেন্টের গ্রাহক সহ অন্যান্য লোকজন এগিয়ে আসলে হোটেলের স্টাফরা ২য় তলায় চলে যায়। সে সময় আমার বন্ধু ফেরদৌস রাসেল বনানী থানা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে আমাকে চিকিৎসার জন্য দ্রুত কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়।
তবে এই হামলার বিষয়ে স্টার কাবাবের কর্তপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগা করা হলে, ব্যস্ততার অজুহাতে কেউ গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলে রাজি হননি।
এ বিষয়ে বনানী থানার ওসি রাসেল সারোয়ার বলেন, স্টার কাবাবে সালেহ মোহাম্মদ রশীদ অলক নামের এক ব্যাক্তির ওপর হামলা হয়েছে। বিষয়টি জানার পর ফোর্স পাঠিয়েছি। সেখান থেকে ওই গ্রাহককে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা দায়ের হয়েছে। ইতোমধ্যে ১১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সকলের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। অজ্ঞাত আরও ৪-৫ জনের নামে মামলা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে আরও কেউ জড়িত থাকলে, সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে।