ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় ক্যারিয়ার
বর্তমান সময়ে ক্যারিয়ার গড়ার ক্ষেত্রে একটি আকর্ষনীয় এবং সৃজনশীল ক্ষেত্র হচ্ছে ইলেকট্রনিক মিডিয়া। ইলেকট্রনিক মিডিয়ার বড় ক্ষেত্র হলো টেলিভিশন। ক্যারিয়ার হিসাবে ইলেকট্রনিক বা টিভি মিডিয়া গত এক দশকে বাংলাদেশে বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে বর্তমানে প্রায় ৩০ এর অধিক টিভি চ্যানেল রয়েছে যেখানে ইতোমধ্যেই কাজ করছে ১০ হাজারের বেশী জনশক্তি। এই চ্যানেল গুলোর বাহিরে ভিজ্যুয়াল মিডিয়ার সাথে জড়িত অন্যান্য আরো প্রোডাকশন হাউজগুলোতে কাজ করছে এর চাইতে বেশী জনশক্তি। ক্যারিয়ার হিসাবে মিডিয়া আয়ের পাশাপাশি খ্যাতিও এনে দিচ্ছে, যার দরুণ এই পেশার দিকে ঝুঁকে আসছে হাজার হাজার তরুণ তরুণী। কিন্তু কিভাবে শুরু করবেন মিডিয়ায় ক্যারিয়ার? কি কি ক্ষেত্র রয়েছে এ পেশাতে? সুযোগ সুবিধা গুলোই বা কিরকম হয়ে থাকে? এ ধরণের প্রশ্নের ঘুরপাক থেকে অনেকেই হয়তো এ পেশায় ক্যারিয়ার গড়ার আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন। তাদের কথা মাথায় রেখেই বিডিজবস.কম এই প্রবন্ধটি প্রকাশ করেছে।
দেশীয় চ্যানেলের ইতিকথা
বাংলাদেশ টেলিভিশন-এর মাধ্যমে বাংলাদেশে ইলেকট্রনিক মিডিয়ার যাত্রা শুরু হয়। এটি ১৯৬৪ সালের ২৫ ডিসেম্বর হতে সাদা-কালো সম্প্রচার শুরু করে। সে সময় এটি পাকিস্তান টেলিভিশন নামে পরিচিত ছিল। মুক্তিযুদ্ধের পর এর নাম পরিবর্তন করে বর্তমান নাম রাখা হয়। ১৯৮০ থেকে এটি রঙিন সম্প্রচার শুরু করে। পরবর্তীতে ১৯৯৭ সালে ‘এটিএন বাংলা’ সম্প্রচারের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে বেসরকারী টিভি চ্যানেলের যাত্রা শুরু হয়। যার ধারাবাহিকতায় আরো অনেক দেশীয় চ্যানেল তাদের সম্প্রচার কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে।
ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় কাজের ক্ষেত্রসমূহ:
অনুষ্ঠান বিভাগ
ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় অনুষ্ঠান বিভাগ একটি আকর্ষনীয় ক্ষেত্র হিসাবে বিবেচিত হয়ে থাকে। এ বিভাগে নিউজের বাইরে অন্যান্য অনুষ্ঠান পরিচালনা করে থাকে। সৃজনশীলতা নির্ভর এই বিভাগে কর্মীদের মধ্যে রয়েছেন প্রযোজক, সহকারী প্রযোজক, ও স্ক্রিপ্ট রাইটার। আর তাই এই ক্ষেত্রে কাজ করার জন্য একজনকে অবশ্যই সৃজনশীল হতে হবে। নিত্য নতুন আইডিয়া বা প্রোগ্রাম ডিজাইন নিয়ে তাকে কাজ করে যেতে হয় প্রতিদিন।
প্রযোজকঃ
ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় কোনো নির্দিষ্ট অনুষ্ঠান সমন্বয়কারীই হলেন প্রযোজক। কোনো অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা, শুটিং ও সম্পাদনা করে প্রচারের উপযোগী করেন তিনি। তার অধীনে সবার কাজের তদারকি ও প্রয়োজনীয় সম্পাদনা তিনি করে থাকেন। আর তাই একজন প্রযোজককে সৃজনশীলতার পাশাপাশি ব্যবস্থাপনার কৌশলগুলোও রপ্ত করতে হয়।
সহকারী প্রযোজকঃ
কাজের ক্ষেত্র হিসাবে অনুষ্ঠান বিভাগে একজনের ক্যারিয়ার শুরু হতে পারে সহকারী প্রযোজক হিসাবে। অনুষ্ঠান পরিচালনায় প্রযোজকের কাজে সাহায্য করেন সহকারী প্রযোজক। অনুষ্ঠান পরিচালনায় দরকারি সব জিনিস আছে কিনা, প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ঠিক আছে কি না- এগুলো তদারকি করেন সহকারী প্রযোজক। প্রডিউসারের নির্দেশনা অনুষ্ঠান প্রচারকার্যক্রমে অগ্রগতির তদারকিও তিনি করে থাকেন। এই পদে ক্যারিয়ার গড়ার জন্য প্রার্থীকে স্নাতক বা স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী এবং একই সাথে সৃজনশীলও হতে হয়। প্রারম্ভিক বেতন কাঠামো ১০-১৫ হাজারের মধ্যে হয়ে থাকে। দক্ষতার ভিত্তিতে ধাপে ধাপে পদোন্নতির মাধ্যমে একজন সহকারী প্রযোজকের, প্রযোজক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
স্ক্রিপ্ট রাইটারঃ
অনুষ্ঠান বিভাগ-এর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পদ হচ্ছে স্ক্রিপ্ট রাইটার। চ্যানেলের অনুষ্ঠানগুলোর স্ক্রিপ্ট রচনা করাই একজন স্ক্রিপ্ট রাইটারের প্রধান দায়িত্ব। আর তাই একজন স্ক্রিপ্ট রাইটারের ভাষার ওপর দক্ষতা এবং একইসাথে সৃজনশীল হতে হবে। অনুষ্ঠান বিভাগকে ইলেকট্রনিক মিডিয়ার প্রাণ বলা হয়। তাই এইক্ষেত্রে কাজ করার জন্য একজনকে অবশ্যই দৃড়চিত্তের অধিকারী হতে হবে। যেহেতু ইলেকট্রনিক মিডিয়ার দর্শকরা ছুটির দিনগুলোতেই বেশী সময়ের জন্য টেলিভিশন দেখে থাকেন, তাই প্রোগ্রাম ডিপার্টমেন্টের সাথে জড়িত কর্মীদেরকে বেশীর ভাগ সময়ই ব্যস্ত থাকতে হয়। এমনকি সরকারী ছুটির দিনগুলোতেও।
সংবাদ বিভাগ
ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় সংবাদ বিভাগ একটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র। এই বিভাগের মাধ্যমে নিউজ বা সংবাদসংশ্লিষ্ট সব কাজ হয়ে থাকে। প্রতিনিয়ত যা ঘটছে সেসব ঘটনা সংবাদের মাধ্যমে প্রচার করা হয়। সংবাদভিত্তিক টেলিভিশন চ্যানেলে সংবাদ বিভাগকে ঘিরেই প্রায় সকল কাজ করা হয়ে থাকে। ইলেকট্রনিক মিডিয়া এবং প্রিন্ট মিডিয়ার সংবাদ বিভাগে যারা কাজ করেন তাদের ক্ষেত্রটি প্রায় একইরকম হলেও পদবীর দিক থেকে ভিন্ন ভিন্ন নাম হয়ে থাকে। পত্রিকায় যাকে বলা হয় সাব এডিটর, টেলিভিশনে তাঁকে বলা হয় নিউজ এডিটর, অর্থাৎ যারা ডেস্কে কাজ করেন তাদেরকে বলে নিউজ এডিটর। নিন্মোক্ত পদ্গুলোতে সংবাদ বিভাগে কাজ করার সুযোগ রয়েছেঃ
১। রিপোর্টার
প্রতিবেদক বা রিপোর্টারই হচ্ছে ইলেকট্রনিক মিডিয়ার মূল চালিকা শক্তি। একজন প্রতিবেদক প্রতিদিন ঘটে যাওয়া ঘটনার তথ্য সংগ্রহ, সাক্ষাৎকার গ্রহণ করে প্রতিবেদন তৈরি করেন। একজন প্রতিবেদককে তৌরি করা প্রতিবেদনগুলো বেশীরভাগ সময় ক্যামেরার সামনে উপস্থাপন করতে হয়। আর তাই তাৎক্ষণিক সাবলীল উপস্থাপনার কৌশল ও কথায় শুদ্ধতা একজন প্রতিবেদকের জন্য আবশ্যক। এক্ষেত্রে ক্যারিয়ার গড়তে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিষয়ে স্নাতকোত্তরধারীরা বিশেষ অগ্রাধিকার পেয়ে থাকে।
২। শিক্ষানবিস নিউজরুম এডিটর
শিক্ষানবিস নিউজরুম এডিটর পদে সাধারণত এন্ট্রি লেভেল থেকে কর্মী নিয়োগ করা হয়ে থাকে। তাই প্রাথমিক বেতন কাঠামো এই পদের জন্য সাধারণত ১৫ থেকে ২০ হাজার এর মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে। কাজের ক্ষেত্র হিসাবে এই পদে নিয়োজিত কর্মীকে ডেস্ক ইনচার্জ প্রদত্ত নিউজ গুলোকে সাজাতে হয় দর্শকের কথা মাথায় রেখে। সাধারণত কর্ম দক্ষতার উপর নির্ভর করে ১ থেকে দুই বছরের মধ্যে ‘নিউজরুম এডিটর‘ পদে পদোন্নতি হতে পারে।
৩। নিউজরুম এডিটর
নিউজরুম এডিটর এর দায়িত্ব হচ্ছে শিক্ষানবিস নিউজরুম এডিটর হতে প্রাপ্ত সংবাদ কে সিনিয়র নিউজরুম এডিটর কর্তৃক এপ্রুভ করে নেওয়া এবং সংবাদ ঠিকভাবে পরিবেশিত হচ্ছে কিনা তা তদারকি করা। নিউজরুম এডিটর এর বেতন কাঠামো ২৫ থেকে ৩০ এর মধ্যে হয়ে থাকে এবং কর্ম দক্ষতার উপর ভিত্তি করে সিনিয়র নিউজরুম এডিটর পদে পদোন্নিত হতে পারে।
৪। সিনিয়র নিউজরুম এডিটরঃ
ন্যাশনাল ডেস্ক ইনচার্জ এর স্বমন্বয় করা নিউজগুলো থেকে সিনিয়র নিউজরুম এডিটররা সম্ভাব্য নিউজ বুলেটিনগুলো বাছাই করে থাকে। এই পদের বেতন কাঠামো ৪০ থেকে ৪৫ হাজারের মধ্যে হয়ে থাকে।
৫। সংবাদ উপস্থাপকঃ
একজন নিউজ প্রেজেন্টার বা সংবাদ উপস্থাপক দর্শকের সামনে সংবাদ পরিবেশন করে থাকেন। সাধারনত একজন সংবাদ উপস্থাপক-এর কাজ হলো-পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট উপস্থাপন, রিপোর্ট উপস্থাপনের আগে সে সম্পর্কে সাধারণ ধারণা দেয়া এবং অনেক সময় প্রতিবেদকের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করে তথ্য সংগ্রহ এবং উপস্থাপন করা। একজন সংবাদ উপস্থাপকের আকর্ষনীয় বাচনভঙ্গি, স্পষ্ট উচ্চারণ এবং সুন্দর উপস্থাপন কৌশলের অধিকারী হতে হয়।
ব্রডকাস্টিং বিভাগ-এ ক্যারিয়ার
বিশ্বব্যাপী তথ্য-প্রযুক্তির বিপ্লবের ফলশ্রুতিতে অন্যান্য ডিপার্টমেন্টের পাশাপাশি ব্রডকাস্টিং ডিপার্টমেন্টের কাজের ধরণ পরিবর্তন এবং সম্প্রসারিত হচ্ছে। ব্রডকাস্টিং ডিপার্টমেন্ট-এর সাহায্যে টিভি চ্যানেলগুলো অডিও-ভিডিও বার্তা আমাদের কাছে দৃশ্যমান এবং বোধগম্য করে থাকে। মূলত এই ডিপার্টমেন্টের কর্মীরা প্রোগ্রাম ডিপার্টমেন্টের বিভিন্ন টিভি অনুষ্ঠান এবং নিউজ অন-এয়ার করে থাকে। একটি টিভি চ্যানেলের ব্রডকাস্টিং ডিপার্টমেন্ট সাধারনত যে কাজগুলো করে থাকে তা হচ্ছে- ভিডিও এডিটিং, মাষ্টার কন্ট্রোল রুমের কাজ, টিভি অনুষ্ঠানের সময় সূচি তত্ত্বাবধান এবং বিভিন্ন রকমের টেকনিক্যাল কাজসমূহ।সাধারনত এই ডিপার্টমেন্টে যারা কাজ করেন তারা হলেন; ভিডিও এডিটর, অডিও ইঞ্জিনিয়ার, ভিডিও ইঞ্জিনিয়ার, ব্রডকাস্ট ইঞ্জিনিয়ার, ডিরেক্টর অব ফটোগ্রাফি এবং কিছু টেকনিশিয়ান।
ভিডিও এডিটর:
ব্রডকাস্টিং ডিপার্টমেন্টে ভিডিও এডিটরদের কাজ হলো টেকনিক্যাল ও সৃজনশীল কাজের সমন্বিত একটি চর্চা। একজন ভালো এডিটরের কল্পনা শক্তি থাকা এবং বেসিক সফটওয়্যার ও হার্ডওয়্যার জ্ঞান থাকা আবশ্যক। কারন একজন এডিটরকে প্রযোজক / প্রোডাকশন হাউস কর্তৃক নির্মিত টিভি অনুষ্ঠানগুলো সেন্সর, সঠিক বোধগম্য করার দায়িত্ব পালন করতে হয়। টেলিভিশনের বিভিন্ন অনুষ্ঠানমালা সুন্দরভাবে সম্পাদনা করে তাকে দৃষ্টিনন্দন ও দর্শনযোগ্য করাই ভিডিও এডিটরদের কাজ। এ বিষয়ে প্রশিক্ষিত, অভিজ্ঞ ও সৃজনশীল ব্যক্তি কাজ করতে পারেন। ফটোগ্রাফি, ফ্রেম, কালার ইত্যাদি সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা থাকতে হবে। এডিটরদের কাজ যেখান থেকে শেষ হয়, সেখান থেকে শুরু হয় মাষ্টার কন্ট্রোল রুমের প্রকৌশলী এবং টেকনিশিয়ানদের কাজ। তারাই সর্বশেষে একটি টিভি অনুষ্ঠানকে অন-এয়ার করে থাকেন। একজন সদ্য স্নাতককে ভিডিও এডিটিং-এ ক্যারিয়ার গড়তে হলে, প্রথমে তাকে ইন্টার্ণ / ট্রেইনি হিসেবে কাজ শিখতে হবে। প্রাথমিক অবস্থায় একজন ফুলটাইম কর্মী ১০-১৫ হাজার টাকা বেতন পেয়ে থাকেন। তবে সঠিক শ্রম ও অধ্যবসায়ে এই ডিপার্টমেন্টে কাজ করলে একজন ভিডিও এডিটর খুব অল্প সময়ে সিনিয়র অথবা চিফ ভিডিও এডিটর পর্যন্ত হতে পারেন। সেক্ষেত্রে তাদের বেতন কাঠামো ৮০ হাজার থেকে ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে।
ইঞ্জিনিয়ার (ভিডিও, অডিও এবং ব্রডকাস্ট)
একটি অনুষ্ঠানকে বোধগম্য করার জন্য এডিটররা সাধারনত অডিও ইঞ্জিনিয়ার, ভিডিও ইঞ্জিনিয়ার, ব্রডকাস্ট ইঞ্জিনিয়ার এবং টেকনিশিয়ানদের কাজ সাথে কাজ করেন। অবশেষে ইঞ্জিনিয়াররা একটি টিভি অনুষ্ঠানকে মাষ্টার কন্ট্রোল রুমের মাধ্যমে অন-এয়ার করে থাকেন। সদ্য ডিগ্রীপ্রাপ্ত ইঞ্জিনিয়াররা (সাধারনত CSE, EEE ডিগ্রীধারী) ব্রডকাস্টিং ডিপার্টমেন্টে ক্যারিয়ার গড়তে পারেন। প্রাথমিক অবস্থায় তাদের বেতন ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা থাকলেও অভিজ্ঞতার সাথে সাথে তারাও ৮০ হাজার থেকে ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বেতন পেয়ে থাকেন।
ডিরেক্টর অব ফটোগ্রাফি
তিনি মূলত আলোক নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে থাকেন। এ ছাড়া ক্যামেরার সৃজনশীল ব্যবহারের দায়িত্বও পালন করেন। একজন ডিরেক্টর অব ফটোগ্রাফি ক্যামেরাম্যান, সহকারী ক্যামেরাম্যান ও ক্যামেরা অপারেটরদের নিয়ন্ত্রণ করে থাকেন। একজন সদ্য স্নাতক কাজের মধ্য দিয়ে অভিজ্ঞতা অর্জনের পাশাপাশি সঠিক শ্রম ও বুদ্ধিমত্তা দিয়ে ডিরেক্টর অব ফটোগ্রাফি হতে পারেন।
অন্যান্য
মিডিয়াতে যে শুধুমাত্র উল্লেখিত ক্ষেত্রেই ক্যারিয়ার গড়া যাবে এমনটি নয়। এটি একটি বিশাল ক্ষেত্র এবং সে অনুসারে এক্ষেত্রে কাজ করার বিশাল পরিসরে সুযোগ রয়েছে। ফ্যাসিলেটর, কপি রাইটার, ডেটাবেজ এডমিনিস্ট্রেটর, গ্রাফিক ডিজাইনার, কোরিওগ্রাফার, মেক-আপ আর্টিস্ট এবং এইচ আর, সেলস এন্ড মার্কেটিং, একাউন্টিং, ফিন্যান্স, ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট-এর কর্মী হিসেবে আপনিও মিডিয়াতে ক্যারিয়ার গড়তে পারেন। এদের মধ্যে ফ্যাসিলেটরের প্রধান কাজ হলো অন্যান্য ডিপার্টমেন্টে লজিস্টিক সাপোর্ট (যেমন: প্রোগ্রাম, ব্রডকাস্ট) দেওয়া। তারা মূলত অনুষ্ঠান ও নিউজ তৈরীতে ডিপার্টমেন্টগুলোর যে সব আনুসাঙ্গিক জিনিস প্রয়োজন, তা সরবারহ করে থাকেন। যে কেউ এসকল পেশায় ন্যুনতম যোগ্যতা (স্নাতক/স্নাতকোত্তর ডিগ্রি) অর্জনের মাধ্যমে কাজ করার সুযোগ পেতে পারেন। একাউন্টিং, ফিন্যান্স, এইচ আর এম সহ বিভিন্ন বিষয়ে স্নাতক/স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারিরাও ক্ষেত্র অনুযায়ী মিডিয়াতে নিজ ক্যারিয়ার গড়তে পারেন।
পড়াশোনা ও প্রশিক্ষণ
বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এবং প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানে সাংবাদিকতায় পড়াশোনা ও প্রশিক্ষণের সুযোগ রয়েছে। সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ রয়েছে। এ ছাড়া প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটি, ডেফোডিল ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস-এ পড়া যায়। প্রশিক্ষণ দেয় এমন প্রতিষ্ঠানের মধ্যে অন্যতম হলো- প্রেস ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ (পিআইবি), সেন্টার ফর মিডিয়া রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং (এমআরটি), বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব জার্নালিজম অ্যান্ড ইলেকট্রনিক মিডিয়া (বিজেম), বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল, জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউট, বিশ্ব কলাকেন্দ্র, কিংবদন্তি মিডিয়া হাউজ, সেন্টার ফর অ্যাডভান্স মিডিয়া (ক্যাম), ঢাকা ফটোগ্রাফিক ইনস্টিটিউশন, চঞ্চল মাহমুদ স্কুল অব ফটোগ্রাফি ইত্যাদি।
উপসংহার
আমাদের দেশে টিভি চ্যানেলগুলোতে কাজের ক্ষেত্র দিন দিন বাড়ছে। অনেকেই এ ক্ষেত্রকে চ্যালেঞ্জিং ক্যারিয়ার ও বলে থাকেন। ব্যক্তির আগ্রহ, যোগ্যতা আর সৃজনশীলতা থাকলে সহজেই এক্ষেত্রে স্থান করে নেয়া সম্ভব। মিডিয়া সংশ্লিষ্ট বিষয়ে পড়াশোনা না করেও যে কেউ ভালো প্রশিক্ষণ নিয়ে এখানে ক্যারিয়ার গড়তে পারেন।তথ্যসূত্রঃ বিডিজবস