ফৌজদারী আদালত ও অফিসের গঠন এবং ক্ষমতা সম্পর্কিত ধারা
ধারা ৬। ফৌজদারী আদালতের শ্রেণীবিভাগ
সুপ্রীম কোর্ট এবং এই বিধি বহির্ভূত কিন্তু বর্তমানে বলবৎ অন্য আইন দ্বারা গঠিত আদালত ব্যতীত বাংলাদেশে পাঁচ শ্রেণীর ফৌজদারী আদালত থাকিবে। যথাঃ
(১) দায়রা আদালত।
(২) মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট।
(৩) প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট।
(৪) দ্বিতীয় শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট।
(৫) তৃতীয় শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট।
আঞ্চলিক বিভাগ
ধারা ৭। দায়রা বিভাগ ও জেলা। বিভাগ ও জেলা পরিবর্তনের ক্ষমতা। পরিবর্তন না হওয়া পর্যন্ত বর্তমান বিভাগ ও জেলা বজায় রাখিবার ব্যবস্থা:
(১) বাংলাদেশে কতিপয় দায়রা বিভাগ থাকিবে, এবং এই বিধির আওতায় প্রত্যেকটি দায়রা বিভাগ একটি জেলা হইবে অথবা প্রত্যেক দায়রা বিভাগে একাধিক জেলা থাকিবে।
(২) সরকার এইরূপ বিভাগ ও জেলার সীমারেখা অথবা সংখ্যা পরিবর্তন করিতে পারিবে।
(৩) এই বিধি বলবৎ হইবার সময় যেই সকল দায়রা বিভাগ ও জেলা বিদ্যমান ছিল, উক্তরূপে পরিবর্তিত না হওয়া পর্যন্ত তাহা বহাল থাকিবে।
(৪) মেট্রোপলিটন এলাকা, এই বিধির আওতায়, দায়রা বিভাগ গণ্য হইবে।
ধারা ৯। দায়রা আদালত :
(১) প্রত্যেক দায়রা বিভাগের জন্য সরকার একটি দায়রা আদালত স্থাপন করিবেন এবং এই আদালতে একজন জজ নিয়োগ করিবেন। মেট্রোপলিটান এলাকার জন্য দায়রা আদালতকে মেট্রোপলিটন দায়রা আদালত বলা হইবে।
(২) সরকারী গেজেটে সাধারণ অথবা বিশেষ আদেশ জারি করিয়া দায়রা আদালত কোন স্থানে বা কোন্ কোন্ স্থানে বসিবে সেই সম্পর্কে সরকার নির্দেশ দিতে পারেন; কিন্তু এইরূপ আদেশ না হওয়া পর্যন্ত দায়রা আদালতসমূহ পূর্বের ন্যায় বসিবে।
(৩) এইরূপ এক বা একাধিক আদালতে কার্য করিবার জন্য সরকার অতিরিক্ত দায়রা জজ ও সহকারী দায়রা জজ নিয়োগ করিতে পারেন:
তবে শর্ত থাকে যে, যে জেলায় জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বা প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রট ২৯-গ ধারার অধীনে অপরাধ বিচারের জন্য বিশেষ ক্ষমতাপ্রাপ্ত হন, সেই জেলা যে দায়রা বিভাগে অবস্থিত তাহার সকল সহকারী দায়রা জজ ঐ বিভাগে অতিরিক্ত দায়রা জজরূপে নিযুক্ত হইয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবে।
(৪) এক দায়রা বিভাগের দায়রা জজকে সরকার অপর একটি বিভাগের অতিরিক্ত দায়রা জজও নিয়োগ করিতে পারেন এবং এইরূপ ক্ষেত্রে তিনি সরকারের নির্দেশ অনুসারে দুইটি বিভাগের যেকোন একটির এক বা একাধিক স্থানে মামলার নিস্পত্তি করিতে পারেন।
(৫) এই বিধি কার্যকর হইবার সময় যেই সকল দায়রা আদালত বিদ্যমান ছিল, তাহার সমস্তগুলিই এই বিধি অনুসারে প্রতিষ্ঠিত হইয়াছে বলিয়া ধরিতে হইবে।
ধারা ১০। জেলা ম্যাজিস্ট্রেট :
(১) মেট্রোপলিটান এলাকার বাহিরে প্রত্যেক জেলায় সরকার একজন প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করিবেন এবং তিনি ‘জেলা ম্যাজিস্ট্রেট’ নামে অবহিত হইবেন।
(২) কোন প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেটকে সরকার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বা যুগ্ম জেলা ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করিতে পারেন এবং এইরূপ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বা যুগ্ম জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সরকারের নির্দেশ অনুসারে এই বিধি বর্তমানে বলবৎ অপর কোন আইন অনুযায়ী জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কোন অথবা সমস্ত ক্ষমতা লাভ করিবেন।
(৩) ১৯২ ধারার (১) উপধারা, ৪০৭ ধারার (২) উপধারা এবং ৫২৮ ধারার (২) ও (৩) উপধারার বিষয়ে এইরূপ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বা যুগ্ন জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের অধঃস্তন বলিয়া বিবেচিত হইবেন।
ধারা ১১। জেলা ম্যাজিস্টেটের শূন্য পদে অস্থায়ীভাবে নিযুক্ত অফিসারঃ
জেলা ম্যাজিস্টেটের পদ শূন্য হইবার ফলে কোন অফিসার অস্থায়ীভাবে তাহার স্থলাভিষিক্ত হইলে সরকারের আদেশ সাপেক্ষে তিনি এই বিধি দ্বারা জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে প্রদত্ত সমস্ত ক্ষমতা প্রয়োগ ও সমস্ত কর্তব্য সম্পাদন করিবেন।
ধারা ১২। অধঃস্তন ম্যাজিস্ট্রেটগণ। তাঁহাদের স্থানীয় এখতিয়ারের সীমাঃ
(১) মেট্রোপলিটান এলাকা ব্যতীত কোন জেলায় জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ছাড়া যেই সংখ্যক ব্যক্তিকে সরকার প্রয়োজন মনে করেন, সেই সংখ্যক প্রথম, দ্বিতীয় অথবা তৃতীয় শ্রণীর ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করিতে পারেন, এবং এই বিধি অনুসারে তাহাদিগকে যে ক্ষমতা দেওয়া হইবে সরকার অথবা সরকারের নিয়ন্ত্রণ সাপেক্ষে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সময়ে সময়ে তাহা প্রয়োগের স্থানীয় এলাকা নির্ধারণ করিতে পারেন।
(২) এই নির্ধারণের ব্যবস্থা সাপেক্ষে এই সকল ব্যক্তির এখতিয়ার ও ক্ষমতা সমস্ত জেলায় সম্প্রসারিত হইবে।
ধারা ১৩। ম্যাজিস্ট্রেটের উপর উপজেলার দায়িত্ব অর্পণের ক্ষমতা। জেলা ম্যাজিস্টেটের উপর ক্ষমতা অর্পণ:
(১) সরকার প্রথম অথবা দ্বিতীয় শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেটের উপর উপজেলার দায়িত্ব অর্পণ করিতে পারেন এবং প্রয়োজনবোধে এই দায়িত্ব হইতে তাহাকে অব্যাহতি দিতে পারেন।
(২) এইরূপ ম্যাজিস্ট্রেটগণ “উপজেলা ম্যাজিস্ট্রেট” নামে অভিহিত হইবেন।
(৩) সরকার এই ধারায় বর্ণিত তাহাদের নিজস্ব ক্ষমতা, জেলা ম্যাজিস্টেটের উপর অর্পণ করিতে পারেন।
ধারা ১৩–ক। উপজেলা ম্যাজিস্ট্রেটঃ
(১) সরকার যেকোন প্রথম বা দ্বিতীয় শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেটকে উপজেলায় নিযুক্ত করিতে পারেন এবং এইরূপ ম্যাজিস্ট্রেটকে উপজেলা ম্যাজিস্ট্রেট বলা হইবে।
(২) উপজেলা ম্যাজিস্ট্রেট এই কার্যবিধি অনুযায়ী উপজেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে প্রদত্ত ক্ষমতাপ্রাপ্ত হইবেন।
ধারা ১৮। মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগঃ
(১) মেট্রোপলিটন এলাকায় সরকার এই কার্যবিধির উদ্দেশ্যে একজন চীফ মেট্রোপলিটান ম্যাজিস্ট্রেট এবং অন্য যেই কয়জন মেট্রোপলিটান ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ উপযুক্ত বিবেচনা করেন সেই কয়জন নিয়োগ করিবেন।
(২) সরকার একজন বা ততোধিক অতিরিক্ত চীফ মেট্রোপলিটান ম্যাজিষ্ট্রেট নিয়োগ করিতে পারিবেন এবং উক্ত অতিরিক্ত চীফ মেট্রোপলিটান ম্যাজিস্ট্রেটগণের এই কার্যবিধি অনুসারে বা বর্তমানে বলবৎ অন্য কোন আইন অনুসারে সরকারের নির্দেশমত চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের সকল বা যেকোন ক্ষমতাপ্রাপ্ত হইবেন।
(৩) সরকার এই কার্যবিধি অনুসারে কোন বিশেষ মামলা বা বিশেষ শ্রেণীর মামলাসমূহ সম্পর্কে অথবা মেট্রোপলিটন এলাকার বা উহার কোন অংশের সাধারণ মামলাসমূহ সম্পর্কে মেট্রোপলিটান ম্যাজিস্ট্রেটের সকল বা যেকোন ক্ষমতা যেকোন ব্যক্তিকে অর্পণ করিতে পারিবেন।
ধারা ২১। চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্টেটঃ
(১) চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তাঁহার অধিক্ষেত্রের স্থানীয় সীমার মধ্যে এই কার্যবিধি বা বর্তমানে বলবৎ অন্য কোন আইন অনুসারে তাঁহাকে বা কোন ম্যাট্রোপলিটান ম্যাজিস্ট্রেটকে প্রদত্ত সকল ক্ষমতা প্রয়োগ করিবেন এবং বিভিন্ন সময়ে সরকারের পূর্ব-অনুদানক্রমে নিম্নলিখিত বিষয়গুলি নিয়ন্ত্রণের জন্য এই কার্যবিধির সহিত সঙ্গতিপূর্ণ বিধিমালা প্রণয়ন করিতে পারিবেনঃ
(ক) মেট্রোপলটান ম্যাজিস্ট্রেটগণের মধ্যে কার্যবন্টন ও পরিচালনা এবং তাহাদের আদালতের কার্যপদ্ধতি;
(খ) মেট্রোপলটান ম্যাজিস্ট্রেটগণের বেঞ্চ গঠন;
(গ) উপরোক্ত বেঞ্চসমূহের বৈঠকের সময় ও স্থান;
(ঘ)মেট্রোপলটান ম্যাজিস্ট্রেটগণের বৈঠক চলাকালে তাহাদের মধ্যে মতের পার্থক্য সৃষ্টি হইলে তাহা নিষ্পত্তির পদ্ধতি; এবং
(ঙ) এমন অন্য কোন বিষয় যে সম্পর্কে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট তাঁহার অধঃস্তন ম্যাজিস্ট্রেটগণের উপর সাধারণ ক্ষমতা প্রয়োগ করিতে পারিতেন।
(২) এই কার্যবিধির উদ্দেশ্যে অতিরিক্ত চীফ মেট্রোপলিটান ম্যাজিস্ট্রেটসহ সকল মেট্রোপলিটান ম্যাজিস্ট্রেট ও অনুরূপ ম্যাজিস্ট্রেটগণের বেঞ্চ চীফ মেট্রোপলিটান ম্যাজিস্ট্রেটের অধীনে থাকিবেন, তিনি বিভিন্ন সময়ে উক্ত ম্যাজিস্ট্রেটগণের মধ্যে কার্যবন্টন সম্পর্কে এই কার্যবিধির সহিত সঙ্গতিপূর্ণ বিধিমালা প্রণয়ন অথবা বিশেষ আদেশ দান করিতে পারিবেন। তথ্যসূত্রঃঅনলাইনঢাকা