আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী বলেছেন, ‘উদবাস্তুদের নিয়ে অনেক দেশে অনেক খেলা হয়েছে। বাংলাদেশের সঙ্গে এই খেলা যারাই খেলতে আসবে আমরা বিশ্বাস রাখি তারা পরাজিত হবে, পরাভূত হবে, পর্যদুস্ত হয়ে মিয়ানমাকে রোহিঙ্গাদের ফিরত নিতে হবে। রোহিঙ্গাদের ফিরত নিতে আমরা মিয়ারমারকে রিকোয়েস্ট করবো, একই সঙ্গে আমরা কূটনৈতিক চাপ অব্যহত রাখবো।’
বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সিনেট ভবনের মিলনায়তনে আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক উপকমিটি আয়োজিত রোহিঙ্গা শরণার্থী বহুমাত্রিক সংকটে বাংলাদেশ এক সেমিনারে প্রধান অতিথি বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মতিয়া চৌধুরী বলেন, ‘মিয়ানমারকে অবশ্যই তাদের লোক ফিরত নিতে হবে। অং সান সু চি নোবেল পেয়েছিলেন আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তাকে অভিনন্দন জানিয়েছিলেন। কোনো কার্পন্য আমরা করিনি। উদারতা, মানবিকতার কোনো কার্পন্য শেখ হাসিনার ভেতরে নেই। তার মানে এই নয় যে নোবেল পেয়ে অং সান সু চি যা খুশি তা করার অধিকার নেই। অং সান সু চি তিনি নির্বাচিত এবং দেশ শাসন করছে, তাকেই রোহিঙ্গাদের ব্যাপারে উদ্যোগ নেয়ার জন্য আমরা আহ্বান জানাবো।’
তিনি বলেন, ‘তার (অং সান সুচি) দেশের লোক বিদেশে থাকতে পারে না। তার দেশের লোক তাকেই নিতে হবে। তাদের ভরণপোষণের ও প্রতিপালনের দায়িত্ব নিতে হবে। অং সান সু চি সামনে আছেন, পিছনে আছেন যারা মিয়ানমারের হর্তাকর্তা, যারা পিছনে কলকাঠি নাড়েন, বা পুতুল খেলা খেলেন, নাচান, সূতা টানেন। সেই পুতুল খেলানোর লোকগুলোকে উপলব্ধি করতে হবে। পৃথিবী এক জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকেন না। একদিন অনেককে বাহিরে পাঠিয়ে বস্তুচুত্য করবেন এটা হতে পারে না।’
সাবেক কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘এর আগেও রোহিঙ্গাদের উপর নির্যাতন করা হয়েছে এবং বাংলাদেশ আশ্রয় দিয়েছে। রোহিঙ্গাদের মনে রাখতে হবে তাদের ফিরে যেতে হবে। তারা ফিরে যেতে বাধ্য। রোহিঙ্গাদের আশ্রয় না দিলে মানুষ শেখ হাসিনার সমালোচনা করত। শেখ হাসিনা নেতৃত্ব মিয়ানমারকে রোহিঙ্গাদের বিষয়ে আন্তর্জাতিক কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হয়েছে। আন্তর্জাতিক অঙ্গণে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেয়ার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। যাতে মিয়ানমারকে বাধ্য করা হয় রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে।’
এসময় বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যা শুধু বাংলাদেশের একার নয়, সবার, আন্তর্জাতিকভাবে সকলকে রোহিঙ্গাদের বিষয়ে দায়িত্ব নিতে হবে। রোহিঙ্গাদের নিজেস্ব ভাষা ও সংস্কৃতি পালন করে। ডিজিটাল পদ্ধতিতে তাদের ভাষা সংরক্ষণ করতে হবে। এজন্য আন্তর্জাতিক কমিটির করার দরকার। রোহিঙ্গাদের লালন-পালনে বাংলাদেশের প্রতিমাসে ১ হাজার কোটি টাকা খরচ হচ্ছে।’
আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক দোলোয়ার হোসেনের সঞ্চালনায় সেমিনারে আরও বক্তব্য রাখেন দলটির উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য এবং বন ও পরিবেশ বিষয়ক উপ-কমিটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. খন্দকার বজলুল হক, স্থপতি ইকবাল হাবিব, বিশিষ্ট সাংবাদিক ইকবাল সোবহান চৌধুরী, নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.) মোহাম্মদ আলী শিকদার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আন্তর্জাতিক বিভাগের অধ্যাপক ড. দেলোয়ার হোসেন প্রমুখ।