আমরা এখন ডাকাতের কবলে মন্তব্য করে নাগরিক ঐক্য’র আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, ‘একটা প্রকৃত ডাকাতদের কবলে আমরা। এই দেশ এখন ডাকাতরা দখল করেছে।’
তিনি বলেন, ‘গ্রামে ডাকাত পড়লে তারা বন্দুক নিয়ে আসে, কোথাও স্টেনগান নিয়ে আসে কিন্তু এ ডাকাতরা রাষ্ট্রের সব থেকে বড় ফায়ার পাওয়ার নিয়ে ভোট ডাকাতি করেছে।’
মঙ্গলবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে গণফোরামের আয়োজনে চকবাজারে অগ্নিকাণ্ডে নিহতদের স্মরণে এক শোকসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
চকবাজারের অগ্নিকাণ্ডের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এ ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মোট কতজন মারা গেছেন বলেন তো? পত্র-পত্রপত্রিকা লিখেছে ৭১ জন, ঘটনার পর বলছে ৭৬ জন, প্রথম আলো লিখেছ মৃত্যুর সংখ্যা নিয়ে সংশয়। নিউইয়র্ক টাইম লিখেছে ১১০ জন।’
তিনি আরও বলেন, ‘এখন পর্যন্ত আমি আপনি কী জানি আরও কতজন লোক মাটির নিচে মরে পড়ে আছে? সমস্ত লাশের হদিস পাওয়া যাচ্ছে না। অনেকে বলছে সরকার প্রকৃত লাশের হিসাব জানতে দিচ্ছে না।’
মন্ত্রীদের সমালোচনা করে মান্না বলেন, ‘বক্তারা দুই শিল্পমন্ত্রীর সমালোচনা করেছে কিন্তু বর্তমান শিল্পমন্ত্রী কী করেছেন? এ দুর্ঘটনার কারণ কী? শিল্পমন্ত্রী ঘটনার দিন বলেছেন, সিলিন্ডার বিস্ফোরণের কারনে এ ঘটনা ঘটেছে। এরপর আমি আর সিলিন্ডার মন্ত্রীকে দেখছিনা। এ ব্যাপারে তিনি আর কোন কথা বলছেন না কারণ তার কথা কোনো সত্যতা মিলছে না। একথা তিনি বলছেন কারণ ব্যবসায়ীরা তা বলেছে।’
সরকারের কাছে টাকাটা বড় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘নিমতলির ঘটনার পর ১৭ দফা দাবি ওঠার পর কে না যানে যে এই প্লাস্টিকের কারখানা কত বিপদ জনক?’
১০ বছরে কোনো কাজ হয়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘‘দুই দিন আগে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ ক্ষমতাধর ব্যক্তি হাসপাতালে গিয়ে বললেন ‘একটা কোনো ঘটনা ঘটলেই সাংবাদিকরা কথা বলে এতো কিসের কথা আগে কাজ করতে দিন।’ দশ বছর আপনাদেরকে কাজ করতে দেয়া হয়ছিল, আপনারা কোনো কাজ করতে পারেন নি। এখন কীভাবে বিস্ফোরণ ঘটেছে এর কারণ তো সাংবাদিক জানবে না।’
চট্টগ্রামে বিমান ছিনতাইয়ের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘চট্রগ্রমের বিমান হাইজ্যাক এটা কী কোনো হাইজ্যাকের ঘটনা? একটা লোক একা কীভাবে বিমান হাইজ্যাক করে? সেই খেলনা পিস্তল আর পাওয়া যাচ্ছে না। এই কমান্ডোরা কী কমান্ডো বলেন তো, তারা নিরস্ত্র একজন ব্যক্তিকে ধরতে পারলো, না তাকে হত্যা করলো। ঘটনা কী? এ ঘটনা চাপা রাখতে পারবেনা।’
বঙ্গবন্ধুর কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু আমাদের অহংকার। তিনি বিশ্ব মানের নেতা কিন্তু তিনি বাকশাল করেছেন, তাকে মানুষ পছন্দ করেনি। এখন তার কন্যা যদি মনে করেন এখন ভোট দখল করে একদলের এক শাসন করবেন তাহলে তিনিও ভুল করছেন।’
তিনি বলেন, ‘যতই উন্নয়নের ফুলঝুড়ি ছড়ান তাতে কোনো কাজ হবে না, ঢাকা কী তিলোত্তমা না ভয়ংকর না অগ্নিকুণ্ড তা পুরান ঢাকাকে দেখলেই বোঝা যায়।’
খালেজা জিয়ার কথা উল্লেখ করে মান্না বলেন, ‘আপনি যদি মানুষকে অন্যায়ভাবে সাজা দেন তাহলে জনগণ বসে থাকবে না। আমরা আজ এই শোক সভায় শুধু কাঁদতে আসিনি কান্নাকে বারুদে পরিণত করতে এসেছি, এর বিরুদ্ধে রুখে এই সরকারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে।’
শোকসভায় আরও উপস্থিত ছিলেন গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন , জেএসডি সভাপতি আ স ম আব্দুর রব, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান, গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টু, কার্যকরী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী প্রমুখ।