কেন চাকরি হচ্ছে না

কেন চাকরি হচ্ছে না

চাকরির সাক্ষাৎকার পর্ব সফল ভাবে শেষ হওয়ার পরও বিশেষ কিছু কারণে নিয়োগকর্তার নিয়োগ তালিকা থেকে বাদ পরে যান অনেকেই। জেনে নিন সেই  বিশেষ কারণগুলো-

১. অনেক চাকরিপ্রার্থী একই সিভি দিয়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে এবং বিভিন্ন পদে আবেদন করেন। এক্ষেত্রে আপনার সিভিটি হওয়া উচিত খুবই নির্দিষ্ট অর্থাৎ একটি নির্দিষ্ট পদের জন্য একটি নির্দিষ্ট সিভি তৈরী করুন যাতে সেখানে প্রতিষ্ঠান এবং পদের প্রাসঙ্গিকতা থাকে। আপনার কর্ম অভিজ্ঞতার  সাথে প্রতিষ্ঠানটির যেমন কর্মী খোঁজ করছে তার কতটা মিল রয়েছে সে বিষয় ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করুন সিভিতে। আপনি যদি একাধিক  পদের জন্য আবেদন করতে চান তাহলে প্রত্যেকটির প্রাসঙ্গিকতা মাথায় রেখে ভিন্ন ভিন্ন এক্ষেত্রে তৈরী করুন। মেন রাখবেন, নিয়োগকর্তারা সবসময় সেইসব চাকরিপ্রার্থীকে প্রতিষ্ঠানে কাজের সুযোগ দিয়ে থাকেন যাদের সেই প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে সম্মুখ ধারণা বা কৌতূহল থাকে। তাই যথাযথ একটি সিভি আপনার চাকরির সম্ভাবনাকে বাড়িয়ে দেয় কয়েকগুন আর এর ব্যত্যয় হলে ফলাফল বিপরীত!

২. চাকরিতে আবেদনের নময় সিভি জমা দেয়ার সাথে সাথে একটি কভার লেটার থাকা আবশ্যক যার মাধ্যমে আপনার যোগ্যতা সম্পর্কে আপনি বিস্তারিতভাবে প্রতিষ্ঠানটিকে জানাতে পারেন। কভার লেটার সংক্ষিপ্ত এবং নির্দিষ্ট পরিসরের হওয়াই উত্তম। ভিন্ন ভিন্ন পদে আবেদনের জন্য ভিন্ন ভিন্ন কভার লেটার তৈরি করা উচিৎ। ভিন্ন ভিন্ন পদে আবেদনের সময় একই কভার লেটার ব্যবহার করার ফলে কভার লেটার তার প্রাসঙ্গিকতা হারায় সেই সাথে চাকরি প্রত্যাশী হারায় সাক্ষাৎকার পরে যাওয়ার সুযোগ!

৩. অনেক প্রার্থী প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে পরিপূর্ণ ধারণা না নিয়েই সাক্ষাৎকার পর্বে যান যা একজন প্রার্থীকে সাক্ষাৎকার পর্বে অপ্রস্তুত করে তোলে। এ ফলে নিয়োগকর্তা কর্মী সম্পর্কে নেতিবাচক ধরণা লাভ করেন। তাই অবশ্যই আপনাকে সাক্ষাৎকার পর্বে যাওয়ার পূর্বে প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে পরিপূর্ণ ধারণা রাখতে হবে। বেশিরভাগ চাকরি প্রত্যাশী অপ্রস্তুত হয়ে সাক্ষাৎকার পর্বে যান এবং চাকরির সুযোগটি হারান!

৪. আপনাকে সবসময় আপনার নিয়মনিষ্ঠ  আচরণের বিষয়টি খেয়াল রাখতে হবে। শুধুমাত্র সাক্ষাৎকার পর্বে নয় প্রতিষ্ঠানের হয়ে উপস্থিত থাকা বাকি মানুষদের সঙ্গে আপনি কিভাবে ব্যবহার করছেন তাও লক্ষ্য করা হয়। এক্ষেত্রে যে বিষয়গুলো নিয়োগকর্তারা নেতিবাচকভাবে গ্রহন করেন-

  • সময়মত উপস্থিত না থাকা
  • অপ্রস্তুতভাবে সাক্ষাৎকার পর্বে উপস্থিত হওয়া
  • বিরক্তিকর অঙ্গভঙ্গী প্রকাশ করা
  • ব্যক্তিগত যোগ্যতার সাথে সিভিতে লেখা তথ্যর মিল না থাকা
  • নিয়োগকর্তাকে ব্যক্তিগত বিষয় বা সমস্যার কথা বলা
  • কোন বিষয়ে মিথ্যা/ভুল তথ্য দেয়া

৫. একজন নিয়োগকর্তা অবশ্যই এমন একজন কর্মী নিয়োগ করবেন যার সেই কোম্পানীর প্রতি পূর্ণ, শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসা এবং কর্ম স্পৃহা আছে। আপনি যদি সেই স্পৃহা, শ্রদ্ধা বা ভালোবাসা দেখাতে ব্যর্থ হন তাহলে প্রতিষ্ঠানটি আপনাকে নিয়োগের ক্ষেত্রে অনিহা প্রকাশ করতে পারে।

৬. নিয়োগদাতাকে সবসময় এটা বোঝান যে আপনি তার প্রতিষ্ঠানের জন্য কতটা যোগ্য। আপনার পূর্ব অভিজ্ঞতা যে এই পদটির সাথে কতটা সম্প্রক্ত তা প্রকাশ করুন এবং বলুন যে আপনার পূর্ব অভিজ্ঞতার মাধ্যমে তাদের প্রতিষ্ঠানে আপনি নতুনত্ব আনতে পারেন। অনেক চাকরি প্রার্থী নিজেদেরকে যোগ্য প্রমান করতে না পারায় ব্যর্থ হয়ে ফিরে যান। তাই নিজেকে যথাসম্ভব এই পদটির জন্য যোগ্য হিসেবে তুলে ধরাই আপনার প্রধান কাজগুলোর মধ্যে একটি। মনে রাখবেন, সবথেকে বড় বিষয় হচ্ছে আত্মবিশ্বাস। নিজে যদি বিশ্বাস করতে পারেন যে আপনি পদটির জন্য উপযুক্ত তবে আপনার সামনে বসে থাকা নিয়োগকর্তাকে তা বোঝানো কখনোই কস্টসাধ্য হবে না।

৭. রেফারেন্স দেয়ার সময় অবশ্যই খেয়াল রাখুন যার যার কথা আপনি উল্লেখ করছেন তিনি আপনার সম্পর্কে যথেষ্ট অবগত কিনা। এমন কারো নাম রেফারেন্স হিসেবে দেবেন না যিনি আপনার ব্যাপারে খুব কম জানেন বা আপনাকে খুব ভালোবাবেও চেনেন না।  অনেক চাকরীপ্রার্থীকেই নিয়োগকর্তা প্রতিষ্ঠানে কাজের সুযোগ দেন না শুধুমাত্র তাঁর দেয়া রেফারেন্স সঠিক থাকে না বলে।তথ্যসূত্রঃ বিডিজবস